
শ্রেণি – নবম | বিভাগ – নবম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর | অধ্যায় – কলিঙ্গ দেশে ঝড়বৃষ্টি
প্রশ্ন উত্তর আলোচনায় রইল নবম শ্রেণির বাংলা বিভাগ থেকে কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর আলোচনা।
প্রশ্ন – কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কবিতার বিষয়বস্তু আলোচনা করো।
উত্তর – মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত অম্বিকামঙ্গল কাব্যে থেকে আলোচ্য ‘কলিঙ্গ দেশে ঝড়বৃষ্টি’ পদ্যাংশটি নেওয়া হয়েছে। পদ্যাংশের এই অংশবিশেষে কলিঙ্গদেশে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগের চিত্র ফুটে উঠেছে। কবিতাটি থেকে আমরা জানতে পারি, দেবী-চন্ডীর অনুরোধে ইন্দ্রদেব কলিঙ্গ দেশের আকাশে কালো মেঘের সঞ্চার করেছেন। সেই গাঢ় কালো মেঘে আকাশ ভরে থাকায় চারিদিক কালো অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। এই অন্ধকার এত গাঢ় যে কোন ব্যক্তি তাদের নিজেদের অঙ্গ – প্রত্যঙ্গই চিনতে পারছে না। ঈশান অর্থাৎ উত্তর পূর্ব কোণে বিদ্যুৎ পূর্ণ মেঘের সঞ্চার হয়েছে। উত্তর দিক থেকে মেঘ ছড়িয়ে পড়েছে সারা আকাশ জুড়ে। চার মেঘ সংবর্ত, আবর্ত, পুষ্কর ও দ্রোন আকাশের চারিদিক থেকে অবিরাম জলবর্ষণ করছে।
প্রচণ্ড জোরে মেঘের গর্জন শোনা যাচ্ছে। বিধ্বংসী ঝড় বৃষ্টি সৃষ্ট প্লাবনে কলিঙ্গের প্রজা সকল অত্যন্ত বিষণ্ণ হয়ে পড়েছে । প্রচণ্ড জোরে ‘হুড় হুড় দুড় দুড়’ শব্দে ভারী ঝড় বইছে, এই অবস্থায় কলিঙ্গদেশের প্রজাসকল সমূহ বিপদের আশঙ্কায় নিজেদের বসতগৃহ বা ‘ভবন’ ছেড়ে পালাচ্ছে। ঝড়ের দাপটে সবুজ মাঠ ও গাছপালা ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে শস্য মাটিতে পরে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আটটি দিক-হস্তী যেন তাদের জলধারায় সব ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আরো পড়ো → কলিঙ্গ দেশে ঝড়বৃষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর
ব্যাঙ যেমন লাফায়, ঠিক তেমন আকাশের বাজ কলিঙ্গ দেশের বুকে এসে পড়ছে (কবির ভাষায় ‘বেঙ্গ তড়কাবাজ’)। চার মেঘের উচ্চ গর্জনে কলিঙ্গবাসী নিজেদের কথা নিজেরাই শুনতে পাচ্ছে না। সাতদিন ধরে নিরবিচ্ছিন্ন বৃষ্টি হয়ে চলেছে, এর মধ্যে সূর্যের আলো দেখা যায়নি। দিন ও রাত্রির মধ্যে আলাদা করে আর কোনো পার্থক্য বোঝা যাচ্ছে না, শুধু মেঘের ঝলকানি দেখা যাচ্ছে। বজ্রপাত বন্ধ হবার আশায় প্রজারা বাকসিদ্ধ ঋষি জৈমিনির নাম স্মরণ করছে। চাষের কাজ বৃষ্টির জন্য বন্ধ (কবির ভাষায় ‘অছুক শস্যের কার্য’) ও বৃষ্টিতে ভিজে মাটির ঘরগুলি কমজোরি হয়ে উঠেছে। ক্রমাগত বৃষ্টিতে ‘ভুজঙ্গ’ অর্থাৎ সাপও নিজের বাসস্থান হারিয়ে জলে ভাসমান। শিলাবৃষ্টির তাণ্ডব চলছে, ঘরের চাল ভেদ করে ঠিক যেন ভাদ্র মাসের তাল পড়ছে।
মা চণ্ডীর আদেশে পবনপুত্র বীর হনুমান ঝড়রূপে কলিঙ্গ দেশে ধ্বংসলীলা চালান, তিনি বড় বড় বাড়ি, মন্দির, গাছপালা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেন। নদনদীগুলি পর্বত প্রমাণ ঢেউ তুলে বাড়ি ভেঙ্গে দিচ্ছে, দেখে মনে হচ্ছে যেন বাড়িঘর ঢেউয়ের মাথায় টলমল করে ভাসছে।
নবম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর → বাংলা | ইতিহাস | ভূগোল | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো।