
শ্রেণি – দশম | বিভাগ – দশম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর | অধ্যায় – জ্ঞানচক্ষু
প্রশ্ন উত্তর আলোচনায় রইল দশম শ্রেণির বাংলা গল্প জ্ঞানচক্ষু থেকে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর আলোচনা।
প্রশ্ন – জ্ঞানচক্ষু গল্পের বিষয়বস্তু আলোচনা করো।
উত্তর – বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য মহিলা সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর ‘কুমকুম গল্পসংকলন’ থেকে পাঠ্য ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি নেওয়া হয়েছে। গল্পের শুরুতেই আমরা দুটি চরিত্রের সাথে পরিচিত হই। প্রথমজন ‘তপন’, এই গল্পের প্রধান চরিত্র এবং দ্বিতীয়জন তপনের ‘ছোটমেসো’।
এরপর গল্পের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমরা জানতে পারি যে তপন তার ছোট মাসির বিবাহ উপলক্ষে তার মামারবাড়ি ছুটি কাটাতে এসেছে। এখানে এসে তপন জানতে পারে তার ছোটমেসো কলেজ অধ্যাপকের পাশাপাশি একজন নামি লেখক। স্কুল পড়ুয়া ছোট্ট তপনের কাছে লেখক মানেই একজন অন্যরকম মানুষ।
আরো পড়ো → অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর
তপন ধীরে ধীরে আবিষ্কার করে যে তার ছোটমেসমশাই তার বাবা, মামা বা কাকুর মতন একজন নিছক সাধারণ মানুষ এবং একজন লেখক হওয়া সত্ত্বেও দাড়ি কামানো, সিগারেট খাওয়া, ঘুমানোর সময় ঘুম বা চানের সময় চানের মতো স্বাভাবিক কাজ করেন। লেখক নামের অসাধারণত্বের মাঝে এই সাধারণত্ব তপনকে যারপরনাই অবাক করে হয়।
মাসির বিয়ে হয়ে যাবার পরেও গরমের ছুটির কারণে তপন তার মামারবাড়িতে আরো কিছুদিন থাকার সুযোগ পায়, এদিকে তার অধ্যাপক – লেখক ছোটমেসোও তার কলেজ বন্ধ থাকার কারণে আরো কিছুদিন তপনের মামারবাড়িতে থেকে যান। এর ফাঁকে, একদিন দুপুরবেলা উৎসাহী তপন একটা গল্প লিখে ফেলে এবং তা ছোটমাসির হাত ঘুরে তপনের লেখক ছোটমেসোর কাছে পৌঁছে যায়।
যে কোনো মাপের লেখকের কাছেই তার নাম ছাপার অক্ষরে দেখা একটি গর্বের বিষয়, তপনও এর ব্যাতিক্রম ছিল না। লেখার গুনমান তেমন ভালো না হলেও এবং অন্য সবাই তপনের গল্প শুনে হাসাহাসি করলেও, তপনের মেসোমশাই সেই লেখার প্রশংসা করেন এবং ‘সন্ধ্যাতারা’ নামক নামি পত্রিকার সম্পাদকের সাহায্যে ছাপিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দেন।
এরপর বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হয়। তপন বাড়ি ফিরে আসে কিন্তু ছোট্ট তপনের লেখক হওয়ার বাসনা বাড়তে থাকে এবং সে আরো কিছু গল্পও রচনা করে ফেলে। ইতিমধ্যে একদিন তপনের ছোটমেসো এবং মাসি তাদের বাড়ি আসেন এবং তারাই সঙ্গে করে নিয়ে আসে তপনের লেখা সংকলিত ‘সন্ধ্যাতারা পত্রিকা’। বাড়ির সবাই জানতে পারেন যে তপনের লেখা সত্যিই পত্রিকায় ছাপা হয়েছে।
পত্রিকায় ছাপার অক্ষরে ‘প্রথম দিন’ (গল্প) শ্রী তপন কুমার রায় দেখে সবাই আনন্দিত হয়। ছোটমেসো অবশ্য স্বীকার করে নেন যে তপনের গল্পটা একটু কাঁচা বলে সেটা একটু ‘কারেকশন’ করে নিতে হয়েছে।
এবার তপন বুঝতে পারে যে তপনের গল্প ছাপা হলেও আসল কৃতিত্ব হল তার ছোটমেসোর কারণ ছোটমেসোর পরিচিতির জোরে গল্পটি সন্ধ্যাতারায় প্রকাশিত হয়েছে। ধীরে ধীরে তপনের আনন্দ ম্লান হয়ে যায়। এরপর তার মায়ের অনুরোধে গল্পটি পড়া শুরু করলে তপন আসল বুঝতে পারে, মেসো তার গল্পটিকে আগাগোড়াই কারেকশন করেছেন। অর্থাৎ গল্পটি তিনি নতুন করে, নিজের পাকা হাতের কলমে লিখেছেন।
এর ফলস্বরূপ দুঃখিত তপন সংকল্প করে যে সে যদি কখনো আর লেখা ছাপতে দেয় তো, নিজের লেখা নিজে গিয়ে জমা দেবে,সে লেখা যদি ছাপা হয় হবে, যদি না হয় না হবে। কিন্তু অন্যের কৃতিত্বে সে কখনই লেখা ছাপবে না। এই ভাবে তপনের জ্ঞানচক্ষুর উন্মোচন বা বোধোদয় হয়।
আরো পড়ো → জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।