
শ্রেণি – নবম | বিভাগ – নবম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর | অধ্যায় – ইলিয়াস
প্রশ্ন উত্তর আলোচনায় রইল নবম শ্রেণির বাংলা বিভাগ থেকে ইলিয়াস গল্পের বিষয়বস্তু।
প্রশ্ন – ইলিয়াস গল্পের বিষয়বস্তু আলোচনা করো।
উত্তর – নবম শ্রেণির পাঠ্য ‘ইলিয়াস’ গল্পটি লিও তলস্তয় রচিত ‘টুয়েন্টি থ্রি টেলস’ (Twenty three tales) গল্প সংকলনের অন্তর্গত। এই ছোট গল্পটির বাংলা তর্জমা করেছেন শ্রী মণীন্দ্র দত্ত মহাশয়।
‘ইলিয়াস’ ছোটগল্পটি একজন পরিশ্রমী, কর্মঠ ভালমানুষের জীবন উপলব্ধির কাহিনী। গল্পের কেন্দ্রবিন্দু আঠেরোশ শতাব্দীর রাশিয়ার উফা প্রদেশ। এই প্রদেশের একটি পশুপালক পরিবারের সদস্য ছিলেন ইলিয়াস। ইলিয়াসের বিয়ের মাত্র একবছর পর তার বাবা মারা যান এবং পরিবার প্রতিপালনের দায়িত্ব এসে পড়ে তার উপর। ইলিয়াসের কঠোর পরিশ্রমের ফলে, তার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি, সাতটি ঘটকী, দুটি গরু ও কুড়িটি ভেড়া মাত্র পঁয়ত্রিশ বছরে পরিবর্তিত হয়ে দুশো ঘোড়া, দেড়শো গরু-মোষ আর বারোশো ভেড়া হয়। ইলিয়াসের এই ঈর্ষণীয় অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিতেও চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয় না। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগি সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করেন, অতিথিদের যথাসাধ্য সেবা করেন।
ক্রমে ইলিয়াসের পারিবারিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হয়। তার এক পুত্র মারামারিতে মারা যায় ও অন্য পুত্র বাবার আদেশ অমান্য করার ফলে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়। এছাড়া দুর্ভিক্ষ, মড়কে তার পালিত পশুরা মারা যায় ও ‘কিরবিজ’ উপজাতির ডাকাতির ফলে তার সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি খোয়া যায়। বৃদ্ধ দম্পতি অবশেষে সব বিক্রি করে, শুধুমাত্র একটি বোঁচকা সম্বল করে লোকের বাড়ি-বাড়ি কাজ করে অন্নসংস্থান করা শুরু করেন।
আরো পড়ো → ইলিয়াসের গল্পের প্রশ্ন উত্তর
এক মধ্যবিত্ত প্রতিবেশী ‘মহম্মদ শা’ ইলিয়াসের দুর্দশা দেখে তাকে করুণাবশত তাকে ও তার স্ত্রীকে তার বাড়ির কাজে নিয়োগ করেন। প্রথমে কষ্ট হলেও অদম্য বৃদ্ধ দম্পতি পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়েছিলেন। একদিন মহম্মদ শায়ের বাড়ি অথিতি সমাগম হয় ও কয়েকজন অথিতি ইলিয়াসের পূর্ব পরিচয় জানতে পেরে তাদের মনের অবস্থার কথা জানতে চান।
সকলকে আশ্চর্য করে ইলিয়সের স্ত্রী শাম-শেমাগি অতিথিদের জানান যে –তারা এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছেন, তারা এখন সত্যিকারের সুখ খুঁজে পেয়েছেন। কারণ এখন তাদের এখন আর কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা নেই। তারা যখন ধনী ছিলেন, তখন লোকনিন্দার ভয়ে অতিথিদের যথাসাধ্য সেবা করতেন, মজুরেরা ফাঁকি দিচ্ছে কিনা তাতে কড়া নজর রাখতে বাধ্য হতেন, পশুরা ঠিক মতো আছে কিনা এই ভেবে সারা রাত দুশ্চিন্তা হত, মাঝে মাঝে পারিবারিক অশান্তিও হত। এতকিছুর মধ্যে নিজেদের একসঙ্গে সময় কাটানো, ঈশ্বরের প্রার্থনা, নিজেদের অন্তরের কথা চিন্তার কোনো অবকাশ ছিল না। অথচ এখন কপর্দকহীন অবস্থায় কোন প্রকার দুশ্চিন্তা নেই, মনিবের যথাসাধ্য সেবাই হল তাদের প্রাধান কাজ। নিজদের মধ্যে বিরোধ নেই, প্রয়োজনীয় খাবারের অভাব নেই, ঈশ্বরের প্রার্থনা করার পর্যাপ্ত সময় আছে। তাই ধনী অবস্থায় নয়, বরং পঞ্চাশ বছর ধরে সুখ খুঁজে আজ ইলিয়াস দম্পতী সত্যিকারের সুখ খুঁজে পেয়েছেন।
বৃদ্ধ দম্পতির কথার অন্তর্নিহিত মানে বুঝতে না পেরে সবাই হেসে উঠলেও মোল্লা তাদের কথার সমর্থনে বলেন, ইলিয়াস ও তার স্ত্রী যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলিই জীবনের সার সত্য এবং পবিত্র গ্রন্থে এই কথাগুলিই লেখা আছে।
নবম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর → বাংলা | ইতিহাস | ভূগোল | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো।