শ্রেণি – দশম | বিভাগ – দশম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর | অধ্যায় – বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন
শুরু হল নতুন বিভাগ – প্রশ্ন উত্তর। আজকের প্রশ্ন উত্তর আলোচনায় রইল দশম শ্রেণির ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন থেকে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর আলোচনা।
প্রশ্ন – বারদৌলি সত্যাগ্রহ টিকা লেখ।
উত্তর – অসহযোগ আন্দোলন এবং আইন অমান্য আন্দোলনের মধ্যবর্তী সময়ে, ১৯২৮ খ্রিস্টব্দে গুজরাটের বারদৌলিতে কংগ্রেসের নেতৃত্বে একটি কৃষক আন্দোলন গড়ে ওঠে যা বারদৌলি সত্যাগ্রহ (Bardoli Satyagraha) নামে পরিচিত।
আন্দোলনের পটভূমি
রায়তওয়ারী বন্দোবস্তের কৃষকরা ছিলেন জমির মালিক, তাদের সরকার নির্ধারিত হারে রাজস্ব দিতে হত। 1927 খ্রিষ্টাব্দে সরকার খাজনার হার প্রথমে ৩০% বৃদ্ধি করে এবং পরে তা কমিয়ে ২২% বৃদ্ধি করে।
সত্যাগ্রহ আন্দোলন
দুর্ভিক্ষের মধ্যেও কৃষকদের উপর অত্যাধিক কর চাপিয়ে দেওয়ার কারণে কৃষকরা সরকারের উপরে ব্যপক অসন্তুষ্ট হয়। এই সময়ে কল্যাণজি মেহতা, কুবেরজি মেহতা এবং দয়ালজি দেশাই নামক স্থানীয় নেতার উদ্যোগে কৃষকদের মধ্যে অসহযোগের আদর্শ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় নেতৃত্ব কংগ্রেস নেতা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সাথে যোগাযোগ করেন এবং সরকারকে কর না দেওয়ার সিধান্ত কংগ্রেস অনুমোদন করে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে 1928 খ্রিষ্টাব্দে বারদৌলির কৃষকদের নিয়ে অহিংস সত্যাগ্রহ শুরু হয়।
সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ভুমিকা
গান্ধীজীর নেতৃত্বে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল বারদৌলিতে অহিংস সত্যাগ্রহের আদর্শে খাজনা দেওয়া বন্ধ করেন এবং আন্দোলন শুরু হয়। তিনি বারদৌলি তালুককে ১৩টি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতিটি ভাগে একজন নেতাকে আন্দোলন পরিচালনের দায়িত্ব দেন।
আরো পড়ো→ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম – প্রশ্ন উত্তর
আন্দোলনে অংশগ্রহণ
পাতিদার কৃষকরা আমদাবাদ ও বোম্বাইয়ের শ্রমিক সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আন্দোলনের জন্য সমর্থন পেয়েছিলেন। এমনকি ‘কালিপরাজ’ শ্রমিকরাও এই আন্দোলনে সামিল হন। এছাড়া এই আন্দোলনে হিন্দু – মুসলমান ঐক্য পরিলক্ষিত হয়। নরহরি পারিখ, রবিশঙ্কর ব্যাস, মোহনলাল পান্ডে প্রমুখ ছিলেন এই আন্দোলনের অন্যতম নেতা। এই আন্দোলনে মহিলা নেতৃবৃন্দ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন, মিঠুবেন প্যাটেল, মণিবেন প্যাটেল ভক্তি বাঈ প্রমুখ মহিলা এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন।
আন্দোলনের সমাপ্তি
বারদৌলি সত্যাগ্রহের খবর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে নানা ভাবে আন্দোলনের পক্ষে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে। এমনকি গান্ধীজি নিজে বারদৌলিতে এসে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। শেষ পর্যন্ত 1929 খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে সরকার খাজনা বাড়ানোর পরিকল্পনা প্রত্যাহার করলে আন্দোলনের সফল অবসান হয়।
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।