
শ্রেণি – নবম | বিভাগ – নবম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর | অধ্যায় – নব নব সৃষ্টি (Nobo Nobo Sristi)
প্রশ্ন উত্তর আলোচনায় রইল নবম শ্রেণির বাংলা বিভাগ থেকে সৈয়দ মুজতবা আলি রচিত নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর আলোচনা।
প্রশ্ন – নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধের নামকরণের সার্থকতা
উত্তর – প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলি তার নব নব সৃষ্টি প্রবন্ধে ভাষার বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রাচীনকালের ভাষা যেমন হিব্রু, গ্রিক, সংস্কৃত, আবেস্তা ইত্যাদি আত্মনির্ভর ভাষা। এই ভাষাগুলি, অন্য কোনো ভাষা থেকে নতুন কোন শব্দ ধার না করে না, বরং প্রয়োজন হলে নিজে থেকে নতুন শব্দের উদ্ভব করে নেয়।
সেই তুলনায় আধুনিক ভাষা প্রবহমান এবং আমাদের দেশীয় ভাষাগুলি তার ব্যাতিক্রম নয়। সময়ের সাথে সাথে আধুনিক ভাষা নতুন শব্দকে নিয়েছে আবার কিছু শব্দকে তার শব্দভান্ডার থেকে সযত্নে বাদ দিয়েছে। প্রাবন্ধিকের ভাষায় – “আমরা প্রয়োজন মতো এবং অপ্রয়োজনেও ভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ নিয়েছি এবং নিচ্ছি”।
বিদ্যাসাগর থেকে রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র থেকে নজরুল সকলেই অন্য ভাষা নিয়ে নিজ সাহিত্যে তা ব্যবহার করেছেন। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বাংলা ভাষায় নতুন শব্দ প্রবেশ করেছে এবং সেগুলি থেকে গেছে। প্রবান্ধিকের মতে ভাষার এই পরিবর্তনকে রোখা অসম্ভব। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে বহু হিন্দি সাহিত্যিক হিন্দি ভাষা থেকে আরবি, ফার্সি এবং ইংরেজি শব্দ তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।
বাংলায় যে-সকল বিদেশী শব্দ প্রবেশ করেছে তার মধ্যে আরবি, ফার্সি এবং ইংরেজিই প্রধান। লেখক তার যুক্তির কলমে লিখেছেন যে ‘বাংলা ভিন্ন অন্য যে- কোন ভাষার চর্চা আমরা করি না কেন, সে ভাষার শব্দ বাংলাতে ঢুকবেই।’ অর্থাৎ ভাষা যতদিন ব্যবহৃত হবে, ততদিন তা অন্য ভাষার সাথে সম্পৃক্ত হবে এবং তার সাথেই সৃষ্টি হবে নতুন শব্দের।
আরো পড়ো – আকাশে সাতটি তারা কবিতার প্রশ্ন উত্তর আলোচনা
ইতিহাস এই ঘটনার সাক্ষী বহন করে। ইরানে আর্য ইরানি ভাষা এবং সেমিতি আরবি ভাষার সংঘর্ষে নবীন ফার্সির সৃষ্টি হয়েছিল। আবার, ভারতবর্ষে একই ভাবে সিন্ধি, উর্দুর সংমিশ্রণে কাশ্মীরি সাহিত্যের সৃষ্টি হয়।
ভাষার পরিবর্তনেও চরিত্র কিন্তু এক থাকে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় ভাটিয়ালির নায়িকা, বাউলের ভক্ত, মুরশিদিয়ার আশিক ও পদাবলীর শ্রীরাধা একই চরিত্র রূপে প্রকাশিত হয়।
সব মিলিয়ে বলা যায় সৈয়দ মুজতবা আলি তাঁর প্রবন্ধে ভাষা সৃষ্টির ইতিহাসের এক অপরূপ দলিল রচনা করেছেন। তাই বলা যায় ‘নব নব সৃষ্টি’ নামকরণ এই প্রবন্ধের জন্য যথাযথ।
নবম শ্রেণির প্রশ্ন উত্তর → বাংলা | ইতিহাস | ভূগোল | জীবন বিজ্ঞান | ভৌতবিজ্ঞান
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে