শ্রেণি – অষ্টম | বিভাগ – বাংলা | অধ্যায় – গাছের কথা (Gacher Kotha)
অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিভাগ থেকে শ্রী জগদীশচন্দ্র বসু রচিত গাছের কথা প্রবন্ধ থেকে প্রশ্ন উত্তর আলোচনা।
Table of Contents
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]
১। বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায় (ক) মাটির তলায় (খ) বীজের কঠিন ঢাকনায় (গ) পাথরের নীচে (ঘ) ফলের ত্বকে
উত্তর – বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায় (খ) বীজের কঠিন ঢাকনায়।
২। অঙ্কুর বের হবার জন্য জল-মাটির সঙ্গে চাই – (ক) হাওয়া (খ) উত্তাপ (গ) সার (ঘ) অন্ধকার
উত্তর – অঙ্কুর বের হবার জন্য জল-মাটির সঙ্গে চাই – (খ) উত্তাপ।
৩। বীজগুলি যেন গাছের – (ক) ডিম (খ) শিশু (গ) প্রজন্ম (ঘ) আত্মজ
উত্তর – বীজগুলি যেন গাছের – (ক) ডিম।
৪। গাছের জীবন মানুষের জীবনের (ক) অনুরূপ (খ) বিপরীত (গ) ছায়ামাত্র (ঘ) প্রতিরূপ
উত্তর- গাছের জীবন মানুষের জীবনের (গ) ছায়ামাত্র।
৫। ধান, যব ইত্যাদির বীজ পাকে – (ক) বৈশাখ (খ) আষাঢে (গ) পৌষ – মাঘে (ঘ) আশ্বিন – কার্তিকে
উত্তর – ধান, যব ইত্যাদির বীজ পাকে – (ঘ) আশ্বিন – কার্তিকে ।
আরো পড়ো → পল্লীসমাজ প্রশ্ন উত্তর
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (VSAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]
১| লেখক কবে থেকে গাছদের অনেক কথা বুঝতে পারেন?
উত্তর – লেখক শ্রী জগদীশচন্দ্র বসু যবে থাকে গাছ, পাখি এবং কীটপতঙ্গকে ভালোবাসতে সিখেছেন তবে থেকে তিনি গাছদের অনেক কথা বুঝতে পেরেছেন।
২| ‘ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।’ – কি দেখা যায়?
উত্তর – মানুষের মধ্যে যেমন কিছু সদ্গুণ লক্ষ্য করা যায়, লেখকের মতে গাছেদের মধ্যেও সদগুণ লক্ষ্য করা যায়।
৩| জীবিতের লক্ষণ কি তা লেখক অনুসারে উল্লেখ করো।
উত্তর – জীবিতের একটি লক্ষণ হল গতি।
৪| ‘বৃক্ষশিশু নিরাপদে নিদ্রা যায়।’ – বৃক্ষশিশু কোথায় নিদ্রা যায়?
উত্তর – উদ্ভিদের বীজের উপর একটি কঠিন ঢাকনা থাকে, তার আড়ালে ‘বৃক্ষশিশু নিরপদে নিদ্রা যায়’।
৫| অঙ্কুর বের হবার জন্য কি কি প্রয়োজন?
উত্তর – অঙ্কুর বের হবার জন্য উত্তাপ, জল ও মাটি প্রয়োজন।
আরো পড়ো → ঔপনিবেশিক অর্থনীতির চরিত্র প্রশ্ন উত্তর
সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ২/৩]
১। ‘আগে এসব কিছুই জানিতাম না।’ – কোন বিষয়টি লেখকের কাছে অজানা ছিল?
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি শ্রী জগদীশচন্দ্র বসু রচিত গাছের কথা প্রবন্ধের অন্তর্গত। লেখক উল্লেখ করেছেন যে আগে যখন তিনি মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াতে যেতেন, তখন তাঁর সব খালি – খালি লাগত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি গাছ, পাখি, কীটপতঙ্গ অর্থাৎ প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শিখেছেন। তিনি বুঝেছেন যে গাছেদের একটা জীবন কাছে, তারাও মানুষের মতো আহার করে, দিন দিন বৃদ্ধি পায়।
২। ‘ইহাদের মধ্যেও তাহার কিছু কিছু দেখা যায়।’ – কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের মধ্যে কি লক্ষ করা যায়?
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি শ্রী জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর গাছের কথা প্রবন্ধে গাছেদের সম্পর্কে বলেছেন।
সময়ের সাথে সাথে তিনি বুঝেছেন যে গাছেরা কথা বলতে না পারলেও, গাছেদেরও মানুষের মতো অভাব, দুঃখ, কষ্ট আছে, তাদের জীবনধারণ করবার জন্য সর্বদা ব্যাস্ত থাকতে হয়। মানুষের মধ্যে যেমন সদ্গুণ আছে, গাছেদের মধ্যেও তার কিছু লক্ষন দেখা যায়।
৩। ‘গাছের জীবন মানুষের জীবনের ছায়ামাত্র।’ – লেখকের এমন উক্তি অবতারণার কারণ বিশ্লেষণ করো।
উত্তর – মানুষের জীবন কর্মময়; জীবনধারণ করবার জন্য আমাদের সর্বদা ব্যস্ত থাকতে হয়। গাছেদের জীবনও কিন্তু এর ব্যাতিক্রম নয়। মানুষের ন্যায় তাদের মধ্যেও অভাব, দুঃখ, কষ্ট আছে, আবার তাদের মধ্যে কিছু সদ্গুণও আছে। যেমন মানুষ অপরের উপকার করতে চায়, ঠিক তেমনই ভাবে বৃক্ষরাও একে অপরকে সাহায্য করে। মা যেমন তার নিজ জীবন দিয়ে সন্তানের জীবন রক্ষা করেন, ঠিক তেমন ব্যাপার উদ্ভিদের মধ্যেও দেখা যায়। মানুষের জীবন এবং উদ্ভিদের জীবনের এই মিল লক্ষ্য করেই লেখক শ্রী জগদীশচন্দ্র বসু বলেছেন – ‘গাছের জীবন মানুষের জীবনের ছায়ামাত্র’
গাছের কথা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর আলোচনার ভিডিও ক্লাস↓
৪। ‘জীবনের ধর্ম’ কীভাবে রচনাংশটিতে আলোচিত ও ব্যাখ্যাত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর – লেখক আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর ‘গাছের কথা’ প্রবন্ধে জীবনের ধর্ম সম্পর্কে কিছু কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন জীবনের প্রধান ধর্ম হল বৃদ্ধি ও গতি। উদ্ভিদ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন যে ছোট একটি চারা গাছ থেকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে বিশাল মহীরুহে পরিণত হয় উদ্ভিদ। জীবিত বস্তু বিকশিত হয় বোঝাতে তিনি ডিমের উদাহরণ দিয়েছেন, পাখির ডিম যেমন সঠিক উত্তাপ ও যত্ন পেলে প্রস্ফুটিত হয়ে পাখি জন্মলাভ করে, ঠিক তেমনভাবে গাছের বীজও সঠিক পরিবেশ পেলে তা থেকে অঙ্কুরোদগম ঘটে। জীবিতের অন্যতম লক্ষণ গতি, প্রাণীদের মতো উদ্ভিদও কিন্তু গতিশীল, তা বোঝাতে লেখক লতানে গাছের উদাহরণ দিয়েছেন।
৫। ‘নানা উপায়ে গাছের বীজ ছড়াইইয়া যায়।’ – উপায়গুলি পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলোচনা করো।
উত্তর – আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর ‘গাছের কথা’ প্রবন্ধে গাছের বীজ বিস্তারের নানান উপায়ের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমন পাখিরা ফল খেয়ে সেই বীজ দূর দেশে নিয়ে যায়, তা থেকে জনমানবশূন্য দ্বীপেও গাছ জন্ম নেয়। আবার বীজ বাতাসে উড়েও অনেক দূর দেশে ছড়িয়ে পড়ে। উদাহরণ হিসাবে লেখক শিমূল গাছের কথা উল্লেখ করেছেন। শিমূল ফল যখন রোদের তাপে ফেটে যায় তখন তার মধ্যের বীজ তুলোর সাথে উড়তে থাকে। এই ভাবে দিনরাত্রি দেশদেশান্তরে বীজ ছড়িয়ে পড়ছে।
আরো পড়ো → মেঘ ও বৃষ্টি প্রশ্ন উত্তর আলোচনা
৬। লেখক তাঁর ছেলেবেলার কথা পাঠ্যাংশে কিভাবে স্মরণ করেছেন, তা আলোচনা করো।
উত্তর – আলচ্য প্রবন্ধে লেখক তাঁর ছেলেবেলার কথা দুইবার স্মরণ করেছেন। প্রথমত, তাঁর ছেলেবেলায় যখন তিনি একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াতে যেতেন তখন তাঁর খালি খালি লাগতো। অর্থাৎ তিনি প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে পারতেন না।
দ্বিতীয়ত, বীজের নানা ভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রসঙ্গে লেখকের ছেলেবেলার একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন, রোদের তাপে শিমূল তুলোর ফেটে তার থেকে তুলো ভেসে বেড়ালে, ছেলেবেলায় লেখক তার পেছনে ছুটতেন। হাত বাড়িয়ে ধরতে গেলেই হালকা শিমূল তুলো বীজকে উপরে ভাসিয়ে নিয়ে যেত। এভাবেই লেখক পাঠ্যাংশে তাঁর ছেলেবেলার কথা স্মরণ করেছেন।
৭। পৃথিবী মাতার ন্যায় তাহাকে কোলে লইলেন।’ – বিশ্বপ্রকৃতি সম্পর্কে লেখকের গভীর উপলবন্ধি উদ্ধৃতিটিতে কিভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলোচনা করো।
উত্তর – বিশ্বপ্রকৃতি তার সকল সৃষ্টির প্রতিই সমান যত্নশীল। লেখক শ্রী জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর ‘গাছের কথা’ প্রবন্ধে বিশ্বপ্রকৃতি সম্পর্কে তাঁর মনের ভাব প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, যদি কোন বীজ বা লেখকের ভাষায় বৃক্ষশিশু মূলউদ্ভিদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোন অরক্ষনীয় স্থানে পৌঁছে যায়, সেখানে কেউ তার খেয়াল না রাখলেও প্রকৃতি তার খেয়াল রাখে। যাতে ঐ বীজ বিনষ্ট না হয় তাই প্রকৃতি তার উপর ধুলো ও মাটির প্রলেপ দিয়ে দেয়, এর ফলে বহুদিন অবধি ঐ বীজ সংরক্ষিত থাকে। লেখক এই ঘটনাকেই ‘পৃথিবীমাতার কোলে টেনে নেওয়ার’ সাথে তুলনা করেছেন।
৮। প্রত্যেক বীজ হইতে গাছে জন্মে কিনা, কেহ বলিতে পারে না। – বীজ থেকে গাছের জন্মের জন্য অত্যাবশ্যকীয় শর্তগুলি আলোচনা করো।
উত্তর – উদ্ভিদের বীজ নানা উপায়ে ছড়িয়ে পড়লেও প্রত্যেক বীজ থেকে কিন্তু উদ্ভিদ জন্ম নেয় না। কারণ বীজ থেকে অঙ্কুর বের হবার জন্য সঠিক উত্তাপ, জল ও মাটি। তাই যদি কোন বীজ কঠিন পাথর বা কোন অপ্রতিকুল অবস্থার মধ্যে পড়ে, সেক্ষেত্রে সেই বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম নাও হতে পারে।
৯। ‘তখন সব খালি খালি লাগিত।’ – কখনকার অনুভূতির কথা বলা হলো? কেন তখন সব খালি-খালি লাগত? ক্রমশ তা কিভাবে অন্য চেহারা পেল তা পাঠ্যাংশ অনুসরণে বুঝিয়ে দাও।
উত্তর – লেখক শ্রী জগদীশচন্দ্র বসু যখন একা মাঠে কিংবা পাহাড়ে বেড়াতে যেতেন, তখন তাঁর সব ‘খালি খালি’ লাগতো। অর্থাৎ লেখক তখন প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে পারতেন না।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তিনি যখন গাছ, পাখি, কীটপতঙ্গকে ভালোবাসতে শিখলেন, বুঝতে শিখলেন তখন তাঁর একাকিত্ম চলে গেল। তিনি প্রকৃতির এই বৃহৎ কর্মশালায় প্রকৃতির নানান জীবের জীবনসংগ্রাম উপলব্ধি করলেন। তিনি ক্রমশ বুঝতে পারেন যে মানুষের মতন উদ্ভিদেরও জীবন আছে। তাদের মধ্যেও নানারকম দোষ, ত্রুটি দুঃখ, কষ্ট আবার সদগুণ আছে। ফলে লেখকের প্রকৃতির সঙ্গে এক হার্দিক নিবিঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাবার জন্য –
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।