শ্রেণি – দশম | বিভাগ – ভূগোল| অধ্যায় – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ | হিমবাহের বিভিন্ন কাজ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ (Himobaher Kaj)
এই পর্বে রইল দশম শ্রেণির ভূগোল বিভাগের প্রথম অধ্যায় – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা।
Table of Contents
সঠিক উত্তর নির্বাচন কর (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। সমুদ্র উপকূলে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট জলমগ্ন উপত্যাকাকে বলে-
ক) রসেমতানে খ) সার্ক গ) ড্রামলিন ঘ) ফিয়র্ড
উত্তর- সমুদ্র উপকূলে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট জলমগ্ন উপত্যাকাকে বলে ঘ) ফিয়র্ড।
২। হিমবাহ ও পর্বত গাত্রের মধ্যে সংকীর্ণ ফাঁককে বলে-
ক) ক্রেভাস খ) বার্গস্রুন্ড গ) হর্ন ঘ) মোরেন
উত্তর-হিমবাহ ও পর্বত গাত্রের মধ্যে সংকীর্ণ ফাঁককে বলে খ) বার্গস্রুন্ড।
৩। ক্রাগের পিছনে প্রলম্বিত শিলাস্তরকে বলা হয়-
ক) ভ্যালি ট্রেন খ) রসে মতানে গ) কেম ঘ) টেল
উত্তর- ক্রাগের পিছনে প্রলম্বিত শিলাস্তরকে বলা হয় ঘ) টেল।
৪। ম্যালাস্পিনা কোন জাতীয় হিমবাহের উদাহরণ-
ক) পার্বত্য হিমবাহ খ) উপত্যাকা হিমবাহ গ) পাদদেশীয় হিমবাহ ঘ) মহাদেশীয় হিমবাহ
উত্তর- ম্যালাস্পিনা কোন জাতীয় হিমবাহের উদাহরণ গ) পাদদেশীয় হিমবাহ।
৫।মহাদেশীয় হিমবাহের মধ্যে বরফযুক্ত উচ্চভূমির চূড়াকে বলে-
ক) লোব খ) স্নাউট গ) এরিটি ঘ) নুনাটাক
উত্তর- মহাদেশীয় হিমবাহের মধ্যে বরফযুক্ত উচ্চভূমির চূড়াকে ঘ) নুনাটাক বলে।
পড়া মনে রাখার সেরা উপায়! ↓
৬। করি নামক ভূমিরূপকে ফরাসী ভাষায় বলে-
ক) এরিটি খ) ফিয়র্ড গ) সার্ক ঘ) গ্রাবরেখা
উত্তর- করি নামক ভূমিরূপকে ফরাসী ভাষায় বলে- গ) সার্ক।
৭। হিমবাহ উপত্যাকার আকৃতি ইংরাজি যে অক্ষরের মত হয়, সেটি হল-
ক) I খ) U গ) V ঘ) K
উত্তর- হিমবাহ উপত্যাকার আকৃতি ইংরাজি যে অক্ষরের মত হয়, সেটি হল খ) U।
৮। হিমপ্রাচীর দেখা যায়-
ক) আরব সাগরে খ) বঙ্গোপসাগরে গ) ভারত মহাসাগরে ঘ) আটলান্টিক মহাসাগরে
উত্তর- হিমপ্রাচীর দেখা যায় ঘ) আটলান্টিক মহাসাগরে।
৯। সমুদ্রে ভাসমান বিশাল হিমবাহকে বলে-
ক) হিমস্তুপ খ) হিম প্রাচীর গ) হিমশৈল ঘ) হিমপর্বত
উত্তর- সমুদ্রে ভাসমান বিশাল হিমবাহকে বলে গ) হিমশৈল।
১০। মহাদেশীয় হিমবাহ দেখা যায়-
ক) হিমালয় পর্বতে খ) আল্পস পর্বতে গ) আন্দিজ পর্বতে ঘ) অ্যান্টার্কটিকায়
উত্তর- মহাদেশীয় হিমবাহ দেখা যায় ঘ) অ্যান্টার্কটিকায়।
আরো পড়ো → ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (VSAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। পৃথিবীর দীর্ঘতম উপত্যকা হিমবাহের নাম কি?
উত্তর- পৃথিবীর বৃহত্তম উপত্যকা হিমবাহের নাম হুবার্ড।
২। হিমবাহের উপরিস্তরে অসংখ্য আড়াআড়ি ও সমান্তরাল ফাটল একসঙ্গে থাকলে তাকে কি বলে?
উত্তর- হিমবাহের উপরিস্তরে অসংখ্য আড়াআড়ি ও সমান্তরাল ফাটল একসঙ্গে থাকলে তাকে ক্রেভার্স বলে।
৩। হিমশৈলের কত পরিমাণ অংশ জলের ওপর ভেসে থাকে?
উত্তর- হিমশৈলের $latex\frac{1}{9}$ পরিমাণ অংশ জলের ওপর ভেসে থাকে।
৪। হিমসিঁড়ির বেসিনের মত অংশে সৃষ্ট হ্রদকে কি বলে?
উত্তর- হিমসিঁড়ির বেসিনের মত অংশে সৃষ্ট হ্রদকে প্যাটার্নওস্টার বলে।
৫। রসে মতানে হিমবাহের কোন অংশ মসৃণ হয়?
উত্তর- রসে মতানে হিমবাহের প্রবাহের দিক অবঘর্ষ প্রক্রিয়ার দ্বারা মসৃণ হয়।
৬। সিয়াচেন হিমবাহটি কোন পর্বতে অবস্থিত?
উত্তর- সিয়াচেন হিমবাহটি কারাকোরাম পর্বতে অবস্থিত।
৭। পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহের নাম কি?
উত্তর- পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহের নাম অ্যান্টার্কটিকার ল্যাম্বার্ট।
৮। এরিটি কোন প্রক্রিয়া দ্বারা গঠিত হয়?
উত্তর- এরিটি অবঘর্ষ প্রক্রিয়া দ্বারা গঠিত হয়।
আরো পড়ো → নদীর কাজ প্রশ্ন – উত্তর আলোচনা
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ২]
১। হিমবাহ কাকে বলে?
উত্তর- মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পুরু বরফের স্তর ভূমির ঢাল বরাবর নিচে নেমে এলে তাকে হিমবাহ বলা হয়। হিমবাহকে বরফের নদী ও বলা হয়।
৩। ফিয়র্ড ও ফিয়ার্ডের তফাৎ কি?
উত্তর-
৪। হিমরেখা কি?
উত্তর- পার্বত্য অঞ্চলে যে অঞ্চল বা রেখার উপর অংশ সারাবছর তুষারাবৃত থাকে এবং যে রেখার নিচে বরফ জলে পরিণত হয় তাকে হিমরেখা বা snowline বলা হয়। হিমরেখা বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে স্থান পরিবর্তন করতে থাকে।
৫। ঝুলন্ত উপত্যাকা কাকে বলে?
উত্তর- কোনো মূল বা বড় হিমবাহের উপর অপেক্ষাকৃত ছোট হিমবাহ গুলি এসে মেসে। এই অবস্থায় মূল হিমবাহটি বেশি শক্তিশালী হওয়ায় এর উপত্যকাটি অপেক্ষাকৃত নিচে অবস্থান করে এবং উপ হিমবাহগুলির উপত্যকাগুলি মূল হিমবাহের উপত্যকা থেকে উচুতে অবস্থান করে। হিমবাহ অপসারিত হলে এই উপত্যকাগুলিকে মূল উপত্যকার উপর ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে হয়। এদের ঝুলন্ত উপত্যকা বলা হয়।
৬। হিমদ্রোণী কাকে বলে?
উত্তর- পার্বত্য অঞ্চলে উপত্যকা দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় নিম্ন ক্ষয় ও পার্শ্ব ক্ষয় সমান ভাবে করতে থাকে ফলে U আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়। একেই U আকৃতি বিশিষ্ট উপত্যকা সৃষ্টি হয়, একেই হিমদ্রোণি বলে।
৭। বার্গশ্রুন্ড বলতে কি বোঝো? [মাধ্যমিক 17]
উত্তর- হঠাৎ ঢালের পরিবর্তন অর্থাৎ উচুঁ পর্বত থেকে যখন হিমবাহ উপত্যকায় প্রবেশ করে তখন পর্বত গাত্র ও হিমবাহের মধ্যে যে সংকীর্ণ ফাঁক দেখা যায় যা হিমবাহের পৃষ্ঠদেশ থেকে তলদেশ অব্দি বিস্তৃত হয় তাকে বার্গস্রুন্ড বলা হয়।
৮। প্রান্ত গ্রাবরেখা বলতে কি বোঝো?
উত্তর- হিমবাহের প্রবাহ পথের পাশে হিমবাহ দ্বারা বাহিত নুড়ি, কাঁকর, বালি, কাদা হিমবাহের গলনের কারণে হিমবাহের প্রবাহ পথে হিমবাহের অগ্রভাগে সঞ্চিত হলে তাকে প্রান্ত গ্রাবরেখা বলা হয়।
৯। প্যাটারনস্টার হ্রদ বলতে কি বোঝো?
উত্তর- পার্বত্য অঞ্চলে উপত্যকা দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় নিম্ন ক্ষয় ও পার্শ্ব ক্ষয় সমান ভাবে করতে থাকে ফলে U আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়। একেই U আকৃতি বিশিষ্ট উপত্যকা বা হিমদ্রোণি সৃষ্টি হয়। এই উপত্যকার দুই পাশ খুব খাড়া হয়ে থাকে এবং মাঝের অংশ অনেক চওড়া হয়ে থাকে। এই উপত্যকার তলদেশের পাশে সিড়ির মত ধাপ দেখা যায়। একে হিম ধাপ বলা হয়। হিম ধাপ এর নিচের অংশে বরফ গলে যে হ্রদ সৃষ্টি হয় তাকে প্যাটারনস্টার হ্রদ বলা হয়।
১০।পর্বতের পাদদেশীয় হিমবাহ বলতে কী বোঝ?
উত্তর- উপত্যকা বা পার্বত্য হিমবাহ যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পর্বতের পাদদেশে অবস্থান করে তখন তাকে পাদদেশীয় হিমবাহ বলা হয়।
আরো পড়ো → সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা প্রশ্ন উত্তর
বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৩]
১। হিমবাহ উপত্যকা ‘U’ আকৃতির হয় কেন?
উত্তর- হিমবাহ নদী অপেক্ষা অধিক ভারী হওয়ায় এর গতি অত্যন্ত মন্থর, তাই মন্থর হওয়া সত্ত্বেও এর ক্ষয় করার শক্তি বেশি। তাই পর্বতের ঢাল দিয়ে নামার সময় হিমবাহ সমান হারে পার্শ্ব ও নিম্ন ক্ষয় করতে থাকে। ফলত হিমবাহ উপত্যাকা অনেকটা ইংরাজি ‘U’ আকৃতির মত দেখতে হয়।
২। হিমবাহ ক্ষয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলি কি কি?
উত্তর- হিমবাহের গতি মন্থর হলেও এর ক্ষয়কারী শক্তি বিদ্যমান। হিমবাহ যে সকল প্রক্রিয়ায় ক্ষয় করে সেগুল হল-
ক। করি বা সার্ক (Cirque)
খ। এরিটি (Arete)
গ। কর্তিত স্পার (Truncated Spur)
ঘ। ঝুলন্ত উপত্যকা
ঙ। রসে মতানে (Roche moutonnée)
চ। ক্রাগ অ্যান্ড টেল (crag and tail)
৩। রসে মতানে ও ড্রামলিনের পার্থক্য লেখ?
৪। ঝুলন্ত উপত্যাকা কিভাবে গঠিত হয়?
উত্তর- কোনো মূল বা বড় হিমবাহের উপর অপেক্ষাকৃত ছোট হিমবাহ গুলি এসে মেসে। এই অবস্থায় মূল হিমবাহটি বেশি শক্তিশালী হওয়ায় এর উপত্যকাটি অপেক্ষাকৃত নিচে অবস্থান করে এবং উপ হিমবাহগুলির উপত্যকাগুলি মূল হিমবাহের উপত্যকা থেকে উচুতে অবস্থান করে। হিমবাহ অপসারিত হলে এই উপত্যকাগুলিকে মূল উপত্যকার উপর ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বলে মনে হয়। এদের ঝুলন্ত উপত্যকা বলা হয়। হিমবাহ গলে গেলে এই ঝুলন্ত অগভীর উপত্যকা গুলির মধ্যে দিয়ে নদী প্রবাহিত হয় এবং মূল হিমবাহ উপত্যকার মিলিত হওয়ার বিন্দুতে জলপ্রপাত এর সৃষ্টি করে। রোটাং পাস এর কাছে এরকম অনেক ঝুলন্ত উপত্যকা দেখা যায়।
৫। হিমসিঁড়ি কিভাবে গড়ে ওঠে?
উত্তর- পার্বত্য অঞ্চলে উপত্যকা দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় নিম্ন ক্ষয় ও পার্শ্ব ক্ষয় সমান ভাবে করতে থাকে ফলে U আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়। একেই U আকৃতি বিশিষ্ট উপত্যকা বা হিমদ্রোণি সৃষ্টি হয়। এই উপত্যকার দুই পাশ খুব খাড়া হয়ে থাকে এবং মাঝের অংশ অনেক চওড়া হয়ে থাকে। এই উপত্যকার তলদেশের পাশে সিড়ির মত ধাপ দেখা যায়। একে হিমসিঁড়ি বলা হয়।
মাধ্যমিকে নম্বর বাড়াবার সেরা উপায় ↓
রচনাধর্মী প্রশ্নউত্তর (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
১। হিমবাহের ক্ষয় কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ বর্ননা করো। [মাধ্যমিক ০৩, ০৬, ১০,১৪]
উত্তর- হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের বর্ণনা নীচে দেওয়া হল-
ক) ফিয়র্ড (Fiord)
হিমবাহ দ্বারা কর্তিত উপত্যকা যখন সমুদ্রে নিমজ্জিত হদশম শ্রেণির ভূগোল বিভাগের প্রথম অধ্যায় – বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা। য়ে যায় তখন থাকে ফিয়র্ড বা ফিয়ার্ড বলা হয়। উচ্চ অক্ষাংশতে হিমবাহ উপত্যকা কে গভীর ভাবে ক্ষয় করে যে সমুদ্র পৃষ্ঠের নিচে অব্দি ক্ষয়কার্য করে থাকে। হিমবাহ যখন উপত্যকা থেকে অপসারিত হয় তখন এই উপত্যকা গুলি জলে ভরে যায়। এই নিমজ্জিত উপত্যকা গুলিই ফিয়র্ড বা ফিয়ার্ড সৃষ্টি করে। ছোট গুলি ফিয়ার্ড ও বড় উপত্যকা গুলি ফিয়র্ড নামে পরিচিত। ফিয়র্ড এর গভীরতা প্রায় 300 মিটার অব্দি হয়ে থাকে। নরওয়েতে এরকম অনেক ফিয়র্ড দেখা যায় তাই নরওয়েকে ফিয়র্ডের দেশ বলা হয়।
খ) U আকৃতির উপত্যকা বা হিমদ্রোণি
পার্বত্য অঞ্চলে উপত্যকা দিয়ে হিমবাহ প্রবাহিত হওয়ার সময় নিম্ন ক্ষয় ও পার্শ্ব ক্ষয় সমান ভাবে করতে থাকে ফলে U আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়। একেই U আকৃতি বিশিষ্ট উপত্যকা বা হিমদ্রোণি সৃষ্টি হয়। এই উপত্যকার দুই পাশ খুব খাড়া হয়ে থাকে এবং মাঝের অংশ অনেক চওড়া হয়ে থাকে। এই উপত্যকার তলদেশের পাশে সিড়ির মত ধাপ দেখা যায়। একে হিম ধাপ বলা হয়। হিম ধাপ এর নিচের অংশে বরফ গলে যে হ্রদ সৃষ্টি হয় তাকে প্যাটারনস্টার হ্রদ বলা হয়।
গ) করি বা সার্ক (Cirque)
পার্বত্য অঞ্চলে দিনের বেলা বরফ গলা জল পর্বত গাত্রে অবস্থিত ফাটলে প্রবেশ করে। রাতের বেলা তাপমাত্রা কমে গেলে ওই জল জমে বরফে পরিণত হয় এবং আয়তনে বৃদ্ধি পায়। এই জমাট বাঁধা বরফ পাথরের ফাটলটি ক্রমশ বড় করে তোলে। সময়ের সাথে সাথে ফাটলটি খুব খাড়া ঢাল যুক্ত অর্ধ গোলাকার গর্তের সৃষ্টি করে অনেকটা হাতল-ওয়ালা চেয়ার এর মত দেখতে হয়। এই অর্ধ গোলাকার গর্তকে ফরাসি ভাষায় সার্ক (Cirque) এবং স্কটল্যান্ডে করি বলা হয়। সার্ক এর মধ্যে বরফ গলা জল জমে যে হ্রদ সৃষ্টি হয় তাকে করি হ্রদ বা টার্ন বলা হয়। পৃথিবীর গভীরতম সার্কটি হলো ওয়ালকট সার্ক (3000 মি)।
২। হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপগুলি চিত্র সহ বর্ণনা করো। [মাধ্যমিক ১৮]
উত্তর- হিমবাহ ও জলধারার মিলিত সঞ্চয় কার্যের ফলে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপগুলি নীচে আলোচিত হল –
ক) এসকার (Esker)
পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ বাহিত পদার্থ স্তরায়িত হয়ে যে আঁকাবাঁকা শৈলশিরা সৃষ্টি করে তাকে এসকার বলা হয়। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডে এরকম অনেক এসকার দেখা যায়। এগুলো লম্বায় 400 কিমি, চওড়ায় 3কিমি ও উচ্চতায় 200 মিটার হতে পারে।
খ) কেম (Kame)
হিমবাহ গলতে শুরু করলে উপত্যকার নিচের অংশের মাঝখানে হিমবাহ বাহিত পদার্থ গুলি সঞ্চিত হয়ে উচু নিচু ঢিবির সারিকে কেম বলা হয়। কেম দেখতে ত্রিকোণাকার হয়ে থাকে। কেম পরস্পর যুক্ত হয়ে সোপান এর মত ভূমিরূপ এর সৃষ্টি করে একে কেম সোপান বলা হয়। আমেরিকার উচ্চ অক্ষাংশতে এরকম অনেক ভূমিরূপ দেখা যায়।
গ) ড্রামলিন (Drumlin)
পর্বতের পাদদেশে হিমবাহ গলে হিমবাহ বাহিত পদার্থ যেমন পাথর, কাঁকর, বালি, কাদা নিচু স্থান গুলো ভরাট করে যে সমভূমি গড়ে তোলে তাকে বহিঃবিধৌত সমভূমি বলা হয়। আইসল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে এরকম সমভূমি দেখা যায়।
আরো পড়ো → উদ্ভিদ হরমোন প্রশ্ন – উত্তর আলোচনা
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাবার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।