
শ্রেণি – নবম | বিভাগ – ইতিহাস | অধ্যায় – ফরাসী বিপ্লব (Forashi Biplob)
এই পর্বে রইল নবম শ্রেণির ইতিহাসের প্রথম অধ্যায় ফরাসী বিপ্লব থেকে কয়েকটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং সেগুলির উত্তর।
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ২]
১। ‘অঁসিয়া রেজিম’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর – ‘অঁসিয়া রেজিম’ কথার অর্থ পুরাতন ব্যবস্থা। ফরাসী বিপ্লবের পূর্বে সারা ইউরোপ জুড়ে যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল তাকে পুরাতনতন্ত্র বা ‘অঁসিয়া রেজিম’ বলা হত।
২। লেতর দ্য ক্যাশে কী?
উত্তর – ফরাসী বিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ে ‘লেতর দ্য ক্যাশে’ নামক পরোয়ানা দ্বারা যে কোন ব্যক্তিকে বিনা বিচারে বাস্তিল দুর্গে বন্দী করা যেত। রাজকর্মচারী এবং অভিজাত শ্রেণির মানুষেরা, এই পরোয়ানার অপব্যবহার করে বহু সাধারণ মানুষকে বিনাবিচারে কারারুদ্ধ করেছিলেন।
৩। চতুর্দশ লুইয়ের ‘আমিই রাষ্ট্র’ উক্তিটি বুরবোঁ রাজবংশের কোন চরিত্রকে প্রকাশ করে?
উত্তর – এই উক্তি ফ্রান্স সম্রাটের স্বৈরাচারী চরিত্রকে প্রকাশ করে। সম্রাট একটি দেশের প্রধান হলেও, আদর্শগত ভাবে তিনি দেশের জনগণের প্রতিনিধি। চতুর্দশ লুইয়ের ‘আমিই রাষ্ট্র’ উক্তিটির মাধ্যমে দেশের জনগণের প্রতি প্রবল উপেক্ষা এবং ক্ষমতার দম্ভ প্রকাশিত হয়।
৪। বিপ্লবের আগে কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ফরাসি দার্শনিকের নাম লেখো।
উত্তর – ফরাসী বিপ্লবের আগে কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ফরাসি দার্শনিক হলেন – মন্তেস্কু, রুশো, ভলতেয়ার, কডিলাক প্রমুখ।
৫। টেনিস কোর্টের শপথ কী?
উত্তর – স্টেটস জেনারেল অধিবেশনের পরবর্তী সময়ে ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে ২০শে জুন তারিখে তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা একটি সভার আয়োজন করেছিলেন, কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে সভাকক্ষ বন্ধ থাকার কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিনিধিরা নিকটবর্তী একটি টেনিস কোর্টে জমায়েত হন। মিরাবো এবং অ্যাবে সিয়েসের নেতৃত্বে প্রতিনিধিরা শপথ করেন যে ‘যতদিন না ফ্রান্সের একটি নতুন সংবিধান গঠন করা হচ্ছে, ততদিন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন সংবিধানের উদ্দেশ্যে কাজ করবেন’। এই ঐতিহাসিক ঘটনা ‘টেনিস কোর্টের শপথ’ নামে খ্যাত।
৬। বাস্তিল দুর্গের পতনের গুরুত্ব কী?
উত্তর – বাস্তিল দুর্গ ছিল ফ্রান্সের স্বৈরাচারী শাসনের প্রতীক। বাস্তিল দুর্গে বিনা বিচারে ফ্রান্সের জনগণকে কারারুদ্ধ করে রাখা হত। ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই জুলাই ফ্রান্সের জনগণ বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে এবং কারাগারটি ধ্বংস দেয়। বাস্তিলের পতনের ফলে রাজা এবং রাজন্যবর্গ তাদের মনোবল হারিয়ে ফেলে এবং স্বৈরাতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের পতন হয়।
৭। সাঁকুলোৎ কাদের বলা হত?
উত্তর – ফরাসী বিপ্লবের প্রাক্কালে ফ্রান্সের তৃতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বুর্জোয়া এবং কৃষক ভিন্ন একটি নতুন শ্রেণির উদ্ভব হয়েছিল। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল শহরের শ্রমিক, ছোট দোকানদার, দিনমজুর, ভবঘুরে ইত্যাদি, এরা একটি ভিন্ন ধরণের ঢিলে ঢোলা পোশাক পরিধান করতো। এই বিশেষ জনগোষ্ঠীকে সাঁকুলোৎ বলা হত। ফরাসী এই সাঁকুলোৎ-রা ফরাসী বিপ্লবে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।
৮। জ্যাকোবিন কারা? এই দলের কয়েকজন নেতার নাম লেখো?
উত্তর – ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের পতনের পরে যে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম রাজনৈতিক দল হল জ্যাকোবিন। এই দলের কর্ম পদ্ধতি ছিল উগ্র। জ্যাকোবিন দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হলেন – এবের, দাঁতে এবং রোবস্পিয়র।
৯। ফ্রান্সের নতুন আইনসভায় (১৭৯১ খ্রিঃ) কোন কোন রাজনৈতিক দল ছিল?
উত্তর – ১৭৯১ সালের নবগঠিত আইনসভায় প্রধানত চারটি রাজনৈতিক দল ছিল, যথা – দক্ষিনপন্থী শাসনতান্ত্রিক দল, জিরন্ডিস্ট দল, জ্যাকোবিন দল এবং মধ্যপন্থী নিরপেক্ষ দল।
১০। ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ নামকরণ কতটা যুক্তিযুক্ত?
উত্তর – ফরাসী বিপ্লবের পরে জনগণের শাসনকে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ বলা হয়, সন্ত্রাস কথার অর্থ জোরপূর্বক ত্রাস বা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা। এই সময়ে রোব্সপিয়ার পরিচালিত সরকার ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার করে বিরোধী রাজনৈতিক দল, বিপ্লবী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। নিছক সন্দেহের বশে গ্রেফতার এবং বিনা অপরাধে প্রাণদন্ড বা কারাদন্ডের নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়। তাই এই সময়কালকে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ নামকরণ যথার্থ।
আরো পড়ো → ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা
বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৪]
১। বিপ্লবের আগে ফরাসি রাজকোশ শূন্য হওয়ার প্রধান কারণগুলি কী গুলি?
উত্তর – ফরাসী বিপ্লবের আগে রাজকোশ শূন্য হওয়ার প্রধান কারণগুলি হল –
অযোগ্য এবং বিলাসসর্বস্ব রাজতন্ত্র – ফরাসী শাসকরা ছিলেন অযোগ্য এবং ভোগবিলাসী, রাজপরিবারের মাত্রাতিরিক্ত বিলাসবহুল জীবনযাত্রা রাজকোশকে ধীরে ধীরে পঙ্গু করে দেয়।
দুর্নীতিগ্রস্থ প্রশাসন – মূলত পঞ্চদশ লুই-এর অযোগ্য শাসনকার্যের ফলে রাজকর্মচারিগণ দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে ওঠে এবং নিজ নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করতে শুরু করে, এর ফলে প্রকৃত রাজস্ব আদায় ব্যাহত হয়।
ভ্রান্তকর নীতি – ফ্রান্সের মোট করের প্রায় সবটাই বহন করতে হত তৃতীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের। ধনী অভিজাতদের কর দান ছিল ঐচ্ছিক।
দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ – ইউরোপে ফ্রান্সের মূল প্রতিদ্বন্ধী ছিল ব্রিটিশরা, ফলে ফ্রান্স ব্রিটিশদের সাথে প্রয়োজন ভিন্ন যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এর ফলে তাদের রাজকোশে সংকট দেখা দেয়।
২। বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের বৈষম্যমূলক করব্যবস্থার পরিচয় দাও।
উত্তর – ফ্রান্সের সমাজ মোট তিনটি স্মপ্রদায়ে বিভক্ত ছিল। এদের মধ্যে প্রথম দুই সম্প্রদায় ছিল অধিকারভোগী, তারা ছিলেন আর্থিক দিক থেকে শক্তিশালী। ফ্রান্সের এই ধনী সম্প্রদায়ের কাছে কর দেওয়া নিয়মটি ছিল ঐচ্ছিক; এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা তাদের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে কর দেওয়া থেকে বিরত থাকতেন। ফ্রান্সের সমস্ত রাজস্বের ৯৬ ভাগ দিত দরিদ্র, জর্জরিত, অধিকারহীন তৃতীয় শ্রেণির মানুষেরা। শুধু তাই নয়, তৃতীয় শ্রেণির মানুষরা রাষ্ট্রকর ছাড়াও তাদের নানান প্রত্যক্ষ কর দিতেন, যেমন ‘টেইল’ (ভূমিকর), ‘ভ্যাতিয়েম’ (আয়কর), ‘টাইথ’ (ধর্মকর), ‘গ্যাবেল’ (লবণকর) ইত্যাদি।
৩। ফরাসি সংবিধান সভার (১৭৮৯ খ্রি) গঠন উল্লেখ করো।
উত্তর – ১৭৮৯ সালের স্টেটস জেনারেল অধিবেশনের সময় তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা নিজেদের সভাকে জাতীয় সভা হিসাবে চিহ্নিত করে। এরপর টেনিস কোর্টের শপথের মাধ্যমে তারা ফ্রান্সের সংবিধান রচনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। তিনটি অধিবেশনের পরে এই ‘জাতীয় সভা’, সংবিধান সভায় রূপান্তরিত হয়। এই সভার প্রতিনিধিদের দুই বছরের প্রচেষ্টায় ফ্রান্সের প্রথম লিখিত সংবিধান রচিত হয়। এই সংবিধানের মাধ্যমে প্রচলিত প্রাচীন সামন্ততান্ত্রিক ধারণা বাতিল করে, নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
৪। সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা আদর্শ প্রতিষ্ঠায় ফরাসি বিপ্লবের প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর – ফরাসী বিপ্লবের মূল আদর্শ ছিল সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা। স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র এবং সামন্ততান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার লক্ষ্যে ফ্রান্সের জনগণ সচেষ্ট হয় এবং সাময়িকভাবে রাজতন্ত্রকে সরিয়ে দিয়ে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। ফরাসী বিপ্লব পুরাতন ব্যবস্থার মূল তিনটি ভিত্তি স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র, সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এবং দুর্নীতিগ্রস্থ গির্জার উপর সরাসরি আঘাত হানে এবং একটি নতুন সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্ম দেয়। ময়িকভাবে রাজতন্ত্রকে সরিয়ে দিয়ে জনগণকে ক্ষমতার উৎস হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে। এর ফলে সমাজে সাম্য ফিরে প্রতিষ্ঠিত হয়, বংশ মর্যাদাকে সরিয়ে রেখে প্রকৃত বিদ্বান মানুষেরা সমাজে গুরুত্ব পেতে শুরু করেন, মানুষের অধিকার ও মর্যাদাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
আরো পড়ো → পৃথিবীর গতিসমূহ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা
রচনাধর্মী প্রশ্নউত্তর (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৮]
১। ফরাসি বিপ্লবের রাজনৈতিক কারণগুলি আলোচনা করো।
উত্তর – ফরাসি বিপ্লবের রাজনৈতিক কারণগুলি নিম্নরূপ।
স্বৈরাতান্ত্রিক রাজতন্ত্রঃ ফরাসী বিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ে, রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় রাজার দায়িত্বছিল সর্বাধিক, কিন্তু বুরবোঁ রাজবংশের রাজারা অষ্টাদশ শতকে হয়েউঠেছিলেন স্বৈরাচারী এবং ভোগবিলাসী। ফলে তারা কোন রকম কাজের বা সিদ্ধান্তের জবাবদিহি করতেন না। এমনকি দেশের শাসন ব্যবস্থাকে অকেজো করে দেবার জন্য ১৬১৪ সাল থেকে ফ্রান্সে ‘স্টেট জেনারেলের অধিবেশন’ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে দেশে এক স্বৈরাতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়, সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লোপ পায়।
দুর্বল শাসনব্যবস্থাঃ সেই সময়ে ফ্রান্সের প্রদেশগুলিতে বিভিন্ন প্রাদেশিক সভা বা পার্লামেন্ট থাকতো; এই পার্লামেন্টের সম্মতি ছাড়া রাজার কোন আইন সেই প্রদেশে প্রযোজ্য হত না। বলাই বাহুল্য এই পার্লামেন্টগুলো পরিচালিত হত স্থানীয় অভিজাতদের দ্বারা। ফলে অভিজাতদের স্বার্থক্ষুণ্ণ করতে পারে এমন কোন আইন পার্লামেন্টগুলো তাদের ক্ষমতাবলে বাতিল করে দিতেন। সেই সময়ে ফ্রান্সে মোট প্রাদেশিক আইনসভা ছিল ১৩টি যাদের মধ্যে প্যারিসের আইনসভা ছিল সবচেয়ে ক্ষমতাশালী। এই সময়ে ফরাসী জনগণের ব্যাক্তি স্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। ‘লেত্র দ্য ক্যাশে’ নামক এক পরোয়ানা সাহায্যে যে কোন ব্যাক্তিকে বিনা বিচারে গ্রেফতার করা যেত। ফ্রান্সের বাস্তিল দুর্গ এই ধরনের নিরপরাধ বন্দীতে পূর্ণ হয়ে ওঠে।
এই সময়ে বিচারব্যবস্থা ছিল প্রহসনে ভরা। প্রথমত ফ্রান্সের আইনবিধি ছিল অত্যন্ত জটিল ও অবৈজ্ঞানিক, আইনগুলি ল্যাটিন ভাষায় রচিত হবার ফলে সাধারণ মানুষের কাছে তা ছিল দুর্বোধ্য। এর উপরে বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন আইন প্রযোজ্য ছিল। এছাড়া, বিচারব্যাবস্থা ছিল দুর্নীতিগ্রস্থ, ঋণে জর্জরিত সরকারের কাছ থেকে অভিজাতরা বিচারকের পদগুলি অর্থের সাহায্যে কিনে নিতেন। ফলে বলাই বাহুল্য, বিচার ব্যবস্থাকে তাঁরা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতেন।
বিশিষ্ট দার্শনিক ভলতেয়ার, ফ্রান্সের এই রাজনৈতিক সঙ্কটকে ‘রাজনৈতিক কারাগার’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
২। ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের ভূমিকা বা অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর – সপ্তদশ শতকের শুরু থেকেই ফ্রান্সে দার্শনিক ও লেখকরা সচেষ্ট হয়ে ওঠেন, এরা মূলত ভ্রান্ত সমাজনীতি, ধর্মীয় গোঁড়ামি, দৈব রাজতন্ত্র ও ব্যাক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আঘাত করেন। এদের মধ্যে কয়েকজন হলেন মন্তেস্কু, রুশো এবং ভলতেয়ার।
ঐতিহাসিকদের মধ্যে ফরাসী বিপ্লবে দার্শনিকদের প্রভাব সম্পর্কে বিবাদ আছে।
- ঐতিহাসিকদের একদল, যেমন Morse Stephens মনে করেন যে “ফরাসী দার্শনিকদের দার্শনিক তত্ত্ব ফরাসী বিপ্লবের কারণ হিসেবে মোটেই বিবেচ্য নয়”। আবার, ঐতিহাসিক Taine-এর মতে, “ফরাসী বিপ্লবের উৎস খুঁজতে হবে ফরাসী দার্শনিকদের রচনায়।”
- ফরাসী দার্শনিকগণ সরাসরি বিপ্লবের সমর্থনে তাদের মত ব্যক্ত করেননি, এছাড়া তাদের মধ্যে আদর্শগত পার্থক্যও ছিল। দার্শনিকদের রচনার সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি পরিচয় না থাকলেও তাদের মূল বক্তব্য সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্র পত্রকাদির মাধ্যমে পৌছে যেত জনগনের কাছে । ১৭৭৭ খ্রিঃ ফ্রান্সে প্রকাশিত পত্র পত্রিকার সংখ্যা ৩৫টি হলেও বিপ্লবের সময় ১৭৮৯ খ্রিঃ সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ১৬৯।
- প্যারিসের সালো ও রেস্তোরা গুলিতে দার্শনিক মতামত নিয়ে তর্ক চলার ফলে ঐ খানে আসা মানুষ জন দার্শনিক মতামত সম্বন্ধে জানতে পারতেন। রাজনৈতিক ক্লাবগুলিতে শিক্ষিত বুর্জোয়া নেতৃত্বের সস্পর্শে এসে সাধারণ জনতাও দার্শনিকদের নতুন ধারণার সঙ্গে পরিচিত হয়ে ছিল।
- দার্শনিকদের চিন্তাধারা ফরাসীদের মানসিক বিকাশে সাহায্য করেছিল।
- সাইমন স্যামা তাঁর ‘দ্য সিটিজেন’ গ্রন্থে বলেন যে, গ্ণসংগীত, কাহিনি ও নাটক, ব্যাঙ্গ চিত্র প্রভৃতি মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চেতনার পরিবর্তন ঘটে।
আরো পড়ো → ফরাসী বিপ্লব অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাবার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।