শ্রেণি – দশম | বিভাগ – ভূগোল | অধ্যায় – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ | ভারতের কৃষি প্রশ্ন উত্তর | bharater krishi Class 10 (Chapter 5)
এই পর্বে রইল দশম শ্রেণির ভূগোল বিভাগের পঞ্চম অধ্যায় – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ – থেকে ভারতের কৃষি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা।
Table of Contents
সঠিক উত্তর নির্বাচন কর (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
1। একটি রবি শস্যের উদাহরণ হল –
ক) ধান খ) গম গ) পাট ঘ) তুলো
উত্তর- একটি রবি শস্যের উদাহরণ হল খ) গম।
2। ভারতে ইক্ষু গবেষণাগারটি অবস্থিত –
ক) কটকে খ) লখনউতে গ) পুসাতে ঘ) জোড়হাটে
উত্তর- ভারতে ইক্ষু গবেষণাগারটি অবস্থিত খ) লখনউতে।
3। বোরো ধান কাটা হয় –
ক) শীতকালে খ) ব র্ষাকালে গ) গ্রীষ্মকালে ঘ) বসন্তকালে
উত্তর- বোরো ধান কাটা হয় গ) গ্রীষ্মকালে।
4। ভারতের একটি প্রধান তৈলবীজ হল –
ক) আলু খ) গম গ) সরষে ঘ) কফি
উত্তর- ভারতের একটি প্রধান তৈলবীজ হল গ) সরষে।
5। কার্পাস যে নামে পরিচিত, তা হল –
ক) স্বর্ণ তন্তু খ) রৌপ্য তন্তু গ) বীজতন্তু ঘ) হীরক তন্তু
উত্তর- কার্পাস যে নামে পরিচিত, তা হল গ) বীজতন্তু।
পড়া মনে রাখার সেরা উপায়! ↓
6। সবুজবিপ্লব কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন –
ক) ড. নরম্যান বোরলগ খ) ড. সাহা গ) ড. হাসান ঘ) ড. মুখোপাধ্যায়
উত্তর- সবুজবিপ্লব কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন ক) ড. নরম্যান বোরলগ।
7। গম হল একটি –
ক) রবি শস্য খ) খরিফ শস্য গ) জায়িদ শস্য ঘ) পানীয় ফসল
উত্তর- গম হল একটি ক) রবি শস্য।
8। ভারতে কফি বোর্ডের সদর দপ্তর যে শহরে অবস্থিত সেটি হল –
ক) কলকাতা খ) বেঙ্গালুরু গ) চেন্নাই ঘ) আমেদাবাদ
উত্তর- ভারতে কফি বোর্ডের সদর দপ্তর যে শহরে অবস্থিত সেটি হল খ) বেঙ্গালুরু।
9। ভারতের প্রধান ধান গবেষণাগারটি অবস্থিত –
ক) পুসায় খ) কটকে গ) চন্দন নগরে ঘ) চুঁচুড়ায়
উত্তর- ভারতের প্রধান ধান গবেষণাগারটি অবস্থিত খ) কটকে।
10। বাগিচা ফসল হল –
ক) ধান খ) পাট গ) চা ঘ) আখ
উত্তর- বাগিচা ফসল হল গ) চা।
আরো পড়ো → ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
একটি বাক্যে উত্তর দাও (VSAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
1। মিলেট কি?
উত্তর – জোয়ার, বাজরা ও রাগি – এই তিনটি অপ্রধান দানাশস্যকে একত্রে মিলেট বলে।
2। ভারতে উৎপাদিত দুটি পানীয় ফসলের নাম লেখো।
উত্তর – ভারতে উৎপাদিত দুটি পানীয় ফসলের নাম হল – চা ও কফি।
3। ভারতের কোন মৃত্তিকা কার্পাস চাষের পক্ষে আদর্শ?
উত্তর – ভারতের কৃষ্ণ মৃত্তিকা কার্পাস চাষের পক্ষে আদর্শ।
4। জায়িদ ফসল কাকে বলে?
উত্তর – যেসব সকল গ্রীষ্মের শুরুতে (মার্চ-এপ্রিলে) চাষ করা হয় এবং বর্ষাকালের শুরুতে অর্থাৎ আষাঢ় (জুন) মাসে সংগ্রহ করা হয়, সেইসব ফসলকে জায়িদ ফসল বলে।
5। ভারতের দুটি রবি শস্যের নাম লেখো।
উত্তর – ভারতের দুটি রবি শস্যের নাম হল সরষে ও গম।
6। ভারতে কোন ধরনের কফির চাষ বেশি হয়?
উত্তর – ভারতে রোবাস্টা কফির চাষ বেশি হয়।
7। ভারতের একটি জায়িদা ফসলের নাম লেখো।
উত্তর – ভারতের একটি জায়িদা ফসলের নাম হল কুমড়ো।
8। ভারতের দুটি খরিফ শস্যের নাম লেখো।
উত্তর – ভারতের দুটি খরিফ শস্যের নাম হল ধান ও পাট।
9। ভারতের একটি ধান গবেষণা কেন্দ্রের নাম লেখো।
উত্তর – ভারতের একটি ধান গবেষণা কেন্দ্রের নাম হল সেন্ট্রাল রাইস রিসার্চ ইন্সটিটিউট (কটক)।
10। ইক্ষু উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থানের অধিকারী?
উত্তর – ইক্ষু উৎপাদনে ভারতের উত্তরপ্রদেশ প্রথম স্থানের অধিকারী।
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ২]
1। অর্থকরী ফসল কাকে বলে?
উত্তর- মৃত্তিকা ও জলবায়ুর উপর নির্ভর করে অর্থ উপার্জন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে যে ফসল চাষ করা হয় তাকে অর্থকরী ফসল বলা হয়। যেমন- পাট ,তুলো, আখ প্রভৃতি।
অর্থকরী ফসলের বৈশিষ্ট্য-
ক) এই ফসল বানিজ্যিক ফসল নামেও পরিচিত।
খ) বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে এই ফসল চাষ করা হয়।
গ) এই ফসল উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা নির্ভর।
2। বাগিচা কৃষির সংজ্ঞা দাও। [মাধ্যমিক ১৫]
উত্তর- অর্থকরী রপ্তানি নির্ভর যে বানিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থা ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে গড়ে তোলা হয় এবং যে ফসল বড় অঞ্চল জুড়ে সারিবদ্ধভাবে ফলানো হয় তাকে বাগিচা কৃষি বলে। যেমন চা, কফি, রবার প্রভৃতি।
বাগিচা কৃষির বৈশিষ্ট্য-
ক) এটি মূলত রপ্তানি নির্ভর।
খ) বহুল শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
গ) এবং অতিরিক্ত মূলধন নির্ভর কৃষি ব্যবস্থা।
3। শীতকালীন ও বসন্তকালীন গম কী?
উত্তর- সারা শীত জুড়ে যে গম চাষ করা হয় তাকে শীতকালীন গম বলে। শীতকালীন গম চাষ ভারতে বেশী হয়।
শীতকালে তুষারপাতের জন্য যে সমস্ত অঞ্চলে মাটি বরফাচ্ছন্ন থাকে সেই অঞ্চলে বসন্তের শুরুতে যখন বরফ গলতে থাকে তখন ঐ বরফাবৃত জলে যে গম চাষ করা হয় তাকে বসন্তকালীন গম বলে।
UPDATE:মাধ্যমিক পরীক্ষার ভীতি কাটাবার সেরা উপায়↓
4। খারিফ শস্য বলতে কি বোঝ?
উত্তর- যে ফসল গ্রীষ্মের শেষে রোপন করা হয় এবং শীতের শুরুতে তোলা হয় তাকে খারিফ শস্য বলে। যেমন- ধান, গম, ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা প্রভৃতি।
খারিফ শস্যের বৈশিষ্ট্য-
ক) খারিফ শস্য মূলত বর্ষা নির্ভর ফসল।
খ) অধিক উষ্ণতার প্রয়োজন।
গ) এই ফসলে জলসেচের ব্যবহার খুবই কম।
5। অর্থকরী ফসল কাকে বলে?
উত্তর- মৃত্তিকা ও জলবায়ুর উপর নির্ভর করে, অর্থ উপার্জন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে যে ফসল চাষ করা হয় তাকে অর্থকরী ফসল বলা হয়। যেমন- পাট, তুলো, আখ প্রভৃতি।
অর্থকরী ফসলের বৈশিষ্ট্য-
ক) এই ফসল বাণিজ্যিক ফসল নামেও পরিচিত।
খ) বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে এই ফসল চাষ করা হয়।
গ) এই ফসল উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা নির্ভর।
বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন উত্তর
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৩]
1। গম নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর ফসল হলেও উত্তর – পশ্চিম ভারতে কেন এত গমের উৎপাদন হয়?
উত্তর- গম নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর ফসল হলেও উত্তর – পশ্চিম ভারতে গমের উৎপাদন বেশি হওয়ার যে সব কারণ রয়েছে সেগুলি হল,
(i) জলবায়ু- পশ্চিম ভারতের শুষ্ক উপক্রান্তীয় জলবায়ু গম চাষের জন্য আর্দশ। এখানকার গড় উষ্ণতা 15°C-40°C এবং গড় বৃষ্টিপাত 25-100cm।
(ii) জলসেচের ব্যবস্থা- ভাকরা নাঙ্গাল জলসেচের প্রসার ঘটিয়েছে যা পশ্চিমের অঞ্চলগুলিতে গম চাষে লাভজনক হয়েছে।
(iii) মাটি- এখানকার মাটি মূলত উর্বর যা গম চাষের জন্য অত্যন্ত সহায়ক।
(iv) সারের ব্যবহার- সবুজ বিপ্লবের পর থেকে সারের ব্যবহার পশ্চিম ভারতে বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় হেক্টর প্রতি গম চাষের পরিমাণ বেড়েছে।
2। ভারতীয় কৃষিতে সবুজবিপ্লব বলতে কী বোঝ
উত্তর- ভারতের কৃষিতে সবুজ বিপ্লব- ভারতের 1960 সালের পর থেকে কৃষিতে অগ্রগতি আনার জন্য উচ্চফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার, যন্ত্রপাতি, প্রভৃতি ব্যবহারের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে যা সবুজবিপ্লব নামে পরিচিত। সবুজবিপ্লবের জনক বলা হয় ড.এম এস স্বামীনাথনকে।
সবুজ বিপ্লবের প্রভাবে- ক) উৎপাদনে বৃদ্ধি, খ) শিল্পোন্নতি, গ) খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা, ঘ) শিল্পোন্নতি, ঙ) কর্ম সংস্থান বৃদ্ধি প্রভৃতি সম্ভব।
3। ঋতু অনুযায়ী ভারতের কৃষিজ ফসলের শ্রেণিবিভাগ করো।
উত্তর- ঋতু অনুযায়ী ভারতের কৃষিজ ফসলকে প্রধান তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
অ) খারিফ শস্য- এই ফসল বিশেষত গ্রীষ্মের শেষে এবং বর্ষার শুরুতে রোপন করা হয় এবং শীতের শুরুতে কাটা হয়। যেমন আমন ধান, পাট তুলো জোয়ার বাজরা প্রভৃতি। এই ফসলের জন্য উষ্ণ আর্দ্র জলবায়ুর প্রয়োজন হয়।
(আ) রবি শস্য- এই ফসল বিশেষত শীতের শুরুতে রোপন করা হয় এবং বসন্তকালের শেষে তোলা হয়।যেমন- গম যব আলু বোরোধান প্রভৃতি। এই ফসলের জন্য শীতল শুষ্ক জলবায়ুর প্রয়োজন হয়।
(ই) জায়িদ শস্য- এই ফসল বিশেষত বসন্তকালে চাষ করা হয় এবং গ্রীষ্মের শেষে তোলা হয়। যেমন- শশা, বাদাম, তরমুজ, আউশ ধান প্রভৃতি।
দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
1। ধান উৎপাদনে কি ধরণের অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন হয়?
উত্তর- ধান চাষের অনুকূল পরিবেশ নীচে বর্ণনা করা হল,
• প্রাকৃতিক পরিবেশ
(a)জলবায়ু-
(i) উষ্ণতা- ধান চাষের জন্য 15°C-30°C উষ্ণতা লাগে যা ধান চাষের জন্য অনুকূল।তবে ধান পাকা বা তোলার সময় 25°C-35°C উষ্ণতা হওয়া প্রয়োজন।
(ii) বৃষ্টিপাত- ধান মূলত বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে, 150-250cm বৃষ্টিপাত ধান চাষের জন্য আর্দশ।
(iii) আর্দ্রতা- ধান রোপনের সময় আর্দ্রতা বেশী থাকা প্রয়োজন এবং ধান তোলার সময় আর্দ্রহীন শুষ্ক আবহাওয়া জরুরী।
(b) মৃত্তিকা- উর্বর দোআঁশ পলি মৃত্তিকায় ধান চাষ ভালো হয়, পলিমাটির নীচে অপ্রবেশ্য কাদামাটির স্তর থাকলে ধান গাছ তার প্রয়োজনীয় জল ধারন করতে পারে।
( c) ভূমির ঢাল- সমতল ভূমি ধান চাষের পক্ষে আর্দশ। নদী উপত্যকা, ব-দ্বীপ ও উপকূলীয় এই সমস্ত অংশে জল দাঁড়াতে পারে বলে এখানে ধান চাষ ভালো হয়।
• অর্থনৈতিক পরিবেশ
(a) শ্রমিক- ধান হল শ্রমনিবিড় চাষ। তাই ধান জমি তৈরী করা, বীজ তোলা, ধান বাঁধা, ঝাড়া, আগাছা পরিষ্কার প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর পরিমাণে দক্ষ সুলভ ও কর্মঠ শ্রমিক লাগে। জনবহুল ভারতে তাই ধান চাষের জন্য শ্রমিকের অভাব হয় না।
(b) মূলধন- ধান চাষের জন্য যে উচ্চফলনশীল বীজ, সার কীটনাশক ,যন্ত্রপাতি প্রভৃতির যোগান মূলধন দাড়াঁই মেটানো সম্ভব যার জন্য কৃষকদের ঋণ ক্রেডিট কার্ড প্রভৃতি সরকার কর্তৃক ব্যবস্থা করেছে।
(c ) জলসেচ- ধানের ফলন সুনিশ্চিত করতে জলসেচের উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকা দরকার। বোরো ধান জলসেচ উপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে।
(d) পরিবহন- ধানচাষকে লাভজনক করার জন্য কৃষিক্ষেত্র থেকে বাজার অবধি উন্নত পরিবহন থাকা আবশ্যক। যা ধানকে আর ও বেশী লাভ জনক করবে।
(e) প্রযুক্তিকরণ- ধান চাষকে প্রযুক্তিকরণের মাধ্যমে আরও উন্নত করতে হবে। ভারতীয় বিভিন্ন কৃষক বিজ্ঞানী ধান চাষের উন্নতির জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা চালাচ্ছেন।
UPDATE:মাধ্যমিক পরীক্ষার ভীতি কাটাবার সেরা উপায়↓
2। কফি চাষের উপযুক্ত পরিবেশ সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর- কফি চাষের উপযুক্ত ভৌগলিক পরিবেশ হল,
• প্রাকৃতিক পরিবেশ
(অ) জলবায়ু-
(i) উষ্ণতা- উষ্ণ আর্দ্র ক্রান্তীয় জলবায়ু কফি চাষের আর্দশ। 20°C-30°C উষ্ণতা কফি চাষের জন্য আর্দশ।
(ii) বৃষ্টিপাত- বার্ষিক 100-200cm বা তার বেশি বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে উন্নতমানের কফি চাষ হয়। আর্দ্রতা ও কুয়াশা- আর্দ্রতা ও কুয়াশা কফি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এইজন্যে আর্দ্রতাযুক্ত সামুদ্রিক এলাকায় কফি চাষ সবথেকে ভালো হয়।
(iii) সূর্যকিরণ- কফি পরিপক্ক হওয়ার জন্য প্রখর সূর্যকিরনের প্রয়োজন হয়ে থাকে।
(আ) মৃত্তিকা- লাল দোআঁশ মাটি ও লাভাসৃষ্ট উর্বর মাটিতে এবং অম্ল উর্বর হিউমাস সমৃদ্ধ মাটিতে কফি চাষ ভালো হয়।
(ই) ভূ- প্রকৃতি- উঁচু পাহাড়ি ঢালু জমিতে যেখানে জল দাড়াঁতে পারে না এইরকম জমি কফি চাষের জন্য অনুকূল।
(ঈ) ছায়াপ্রদানকারী গাছ- প্রবল বাতাস, তীব্র সূর্যলোক, তুহিন প্রভৃতির হাত থেকে কফি গাছ বাঁচানোর জন্য বড়ো বড়ো ছায়াপ্রদানকারী গাছের প্রয়োজন হয়।
• অর্থনৈতিক পরিবেশ
(অ) মূলধন- কফি চাষের প্রথম অবস্থায় কফি উৎপাদন হয় না তবে বাগান পরিচর্যা, শ্রমিকদের মজুরী প্রভৃতির জন্য প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন আছে।
(আ) শ্রমিক- কফি বাগিচা পরিচর্যা, গাছের রক্ষণাবেক্ষণ, ফল সংগ্রহ, বীজ চূর্ণ প্রভৃতি কাজে প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রমী শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
(ই) পরিবহন- কফি বাণিজ্যিক কৃষি হওয়ায় এবং তা চাহিদাসম্পন্ন স্থানে পৌঁছে দেবার জন্য উন্নত মানের পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থার দরকার হয়।
আরো পড়ো → বৃত্তস্থ চতুর্ভুজ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান
3। ভারতে কার্পাস উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।
উত্তর- কার্পাস ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ পরিবেশের তন্তু জাতীয় ফসল। কার্পাস উৎপাদনে অনুকূল ভৌগলিক অবস্থা নিম্মলিখিত,
(অ) জলবায়ু –
(i) উষ্ণতা- 20°C-25°C উষ্ণতায় কার্পাস চাষ ভালো হয় তবে 35°C উষ্ণতাতেও কার্পাস চাষ হয়। (ii) বৃষ্টিপাত- হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে কার্পাস চাষ ভালো হয়ে থাকে। গড় 50-100 সেমি বৃষ্টিপাত প্রয়োজন হয়।
(iii)আর্দ্রতাও সূর্যকিরণ- কার্পাস গাছ বৃদ্ধির সময় বাতাসে আর্দ্রতা বেশী থাকা প্রয়োজন, কিন্তু কার্পাসের গুটি পাকার সময় আর্দ্রহীন, শুষ্ক রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া দরকার হয়।
(আ) মাটি- কার্পাস উর্বর চুন মিশ্রিত লবণাক্ত দো-আঁশ মাটিতে যার জলধারণ ক্ষমতা বেশী এইরকম রেগুর বা কৃষ্ন মৃত্তিকায় ভালো চাষ হয়। এই জন্য দক্ষিণ ভারতের লাভাগঠিত কৃষ্ণ
মৃত্তিকা কার্পাস চাষের আর্দশ জায়গা।
(ই) ভূ- প্রকৃতি- গাছের গোড়ায় জল জমা কার্পাস চাষের ক্ষেত্রে খুবই ক্ষতিকারক তাই জলনিকাশী ব্যবস্থা যুক্ত মৃদু ঢালু জমিতে কার্পাস চাষ করা হয়।
পড়া মনে রাখার সেরা উপায়! ↓
4। ভারতের চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা করো।
উত্তর- ক্যফিনযুক্ত মৃদু উত্তেজক পানীয় চা সারা পৃথিবীর জনপ্রিয়। এই বাগিচা ফসলের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ গুলি হল,
(অ) জলবায়ু- চা আর্দ্র ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। চা চাষে প্রচুর উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়।
(i) উষ্ণতা- 20°C- 30°C উষ্ণতায় চা চাষ হয়ে থাকে।
(ii) বৃষ্টিপাত- চা চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত লাগে, গড়ে 150- 200 cm.
(আ) আবহাওয়ার অন্যান্য অবস্থা- নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া চা-এর পাতায় সুগন্ধ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
চা গাছ তীব্র সৌরকিরণ সহ্য করতে পারে না, সেইজন্য চা বাগানের মাঝখানে সারি দিয়ে ছায়া প্রদানকারী বৃক্ষ লাগানো হয়। চা গাছ তুষরপাত সহ্য করতে পারলেও অত্যধিক তুষার চা গাছের ক্ষতি করে।
(ই) মৃত্তিকা- লৌহ গঠিত দো-আঁশ মাটি তে চা চাষ ভালো হয়। মাটির ক্ষয় রোধ করার জন্য পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে চায়ের বাগান তৈরি করা হয়। মৃত্তিকায় হালকা জৈব পদার্থ ও অল্প পরিমাণ অম্লতাও চা চাষের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
(ঈ) ভূ- প্রকৃতি- উঁচু পাহাড়ি ঢালু জমিতে যেখানে জল দাঁড়াতে পারে না সেইরকম জমি চা চাষের জন্য অনুকূল তবে জলনিকাশী ব্যবস্থাও খুব উন্নত হওয়া প্রয়োজন।
(উ) ছায়াপ্রদানকারী গাছ- প্রবল বাতাস, তীব্র সূর্যলোক, তুহিন প্রভৃতির হাত থেকে চা গাছকে বাঁচানোর জন্য বড় বড় ছায়াপ্রদানকারী গাছের প্রয়োজন হয়।
5। ভারতের ইক্ষু চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ বর্ণনা কর।
উত্তর- ভারতের ইক্ষু চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ গুলি হল,
(অ) জলবায়ু- ইক্ষু আর্দ্র ক্রান্তীয় অঞ্চলের ফসল উদ্ভিদ। ইক্ষু চাষে মাঝারি উষ্ণতা ও প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়। বলা যেতে পারে মূলত বৃষ্টির উপর নির্ভর করেই ইক্ষু চাষ করা হয়।
(i) উষ্ণতা- 20°C- 30°C উষ্ণতায় ইক্ষু চাষ হয়ে থাকে। আখ পাকার সময় আখের মিষ্টি ভাব বাড়ানোর জন্য প্রচুর সূর্য কিরণ ও লাগে।
(ii) বৃষ্টিপাত- ইক্ষু চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত দরকার প্রায় 100-150cm মত।
(iii) সামুদ্রিক বাতাস- সমুদ্রের নোনা বাতাস আখ উৎপাদনে সহায়ক। তবে কুয়াশা এবং তুষারপাত অত্যন্ত ক্ষতিকর।
(আ) আবহাওয়া বা অন্যান্য অবস্থা-
i) ইক্ষু চাষে দীর্ঘকালীন বর্ষা ও পরিমিত বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়।
ii) আখ চাষের জন্য কমপক্ষে 200 দিন তুহিন মেঘমুক্ত আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়।
iii) শুকনো শীতকালীন আবহাওয়া ইক্ষুর রসে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
(ই) মৃত্তিকা- চুন ও লবণাক্ত দোআঁশ মৃত্তিকা এবং কৃষ্ণ মৃত্তিকা ইক্ষু চাষের পক্ষে উপযোগী । জমির উর্বরতা দ্রুত হ্রাস পায় বলে নিয়মিত নাইট্রোজেন ও রাসায়নিক সার দেওয়া প্রয়োজন।(ঈ) ভূমির প্রকৃতি- জলনিকাশী ব্যবস্থাযুক্ত সমতল জমি বা সামান্য ঢালু জমি ইক্ষু চাষের জন্য আদর্শ।
আরো পড়ো → আয়নীয় সমযোজী বন্ধন অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।