শ্রেণি – দশম | বিভাগ – জীবনবিজ্ঞান| অধ্যায় – সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন | Sopushpok udvider jouno jonon (Chapter 8)
এই পর্বে রইল দশম শ্রেণির জীবন বিজ্ঞান বিভাগের অষ্টম অধ্যায় – সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন থেকে কয়েকটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন – উত্তর আলোচনা।
Table of Contents
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো। (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]
1। ফুল হল এক প্রকার রূপান্তরিত –
(ক) মূল (খ) পাতা (গ) পুষ্পবিন্যাস (ঘ) বিটপ
উত্তর- ফুল হল এক প্রকার রূপান্তরিত (ঘ) বিটপ।
2। ফুলের আনুষঙ্গিক বা সাহায্যকারী স্তবক হল –
(ক) বৃতি ও স্ত্রীস্তবক (খ) পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক (গ) পাপড়ি ও বৃতি (ঘ) পাপড়ি ও পুংস্তবক
উত্তর- ফুলের আনুষঙ্গিক বা সাহায্যকারী স্তবক হল (গ) পাপড়ি ও বৃতি।
3। নীচের যেটি সমাঙ্গ পুষ্প, সেটি হল –
(ক) মটর (খ) ধুতরো (গ) অপরাজিতা (ঘ) বক
উত্তর-যেটি সমাঙ্গ পুষ্প, সেটি হল –(খ) ধুতরো।
4। নীচের যেটি পুংকেশরচক্র বা পুংস্তবকের অংশ নয়, সেটি হল –
(ক) পরাগধানী (খ) পুংদন্ড (গ) ডিম্বক (ঘ) পরাগ
উত্তর-যেটি পুংকেশরচক্র বা পুংস্তবকের অংশ নয়, সেটি হল – (গ) ডিম্বক।
5। বায়ুপরাগী পুষ্প হল –
(ক) ধান (খ) পাতাশ্যাওলা (গ) আম (ঘ) শিমূল
উত্তর- বায়ুপরাগী পুষ্প হল (ক) ধান।
পড়া মনে রাখার সেরা উপায়! ↓
6। শিমূল ফুল হল –
(ক) বায়ু পরাগী (খ) জল পরাগী (গ) পতঙ্গ পরাগী (ঘ) পক্ষী পরাগী
উত্তর- শিমূল ফুল হল (ঘ) পক্ষী পরাগী।
7। সপুষ্পক উদ্ভিদের মূলের ক্রোমোজোম সংখ্যা 32 হলে, এর গ্যামেটের ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে –
(ক) 8 (খ) 16 (গ) 24 (ঘ) 32
উত্তর- সপুষ্পক উদ্ভিদের মূলের ক্রোমোজোম সংখ্যা 32 হলে, এর গ্যামেটের ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে (খ) 16.
8। শিশু উদ্ভিদকে খাদ্য সরবরাহ করে –
(ক) বীজপত্র (খ) জল (গ) মাটি (ঘ) বাতাস
উত্তর- শিশু উদ্ভিদকে খাদ্য সরবরাহ করে (ক) বীজপত্র।
9। নিষিক্ত ডিম্বাণু পরিবর্তিত হয়ে গঠন করে –
(ক) ভ্রূণ (খ) বীজ (গ) ডিম্বক (ঘ) ফল
উত্তর- নিষিক্ত ডিম্বাণু পরিবর্তিত হয়ে গঠন করে (ক) ভ্রূণ।
10। সস্য নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যা হল –
(ক) n (খ) 2n (গ) 3n (ঘ) 4n
উত্তর- সস্য নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যা হল (গ) 3n.
আরো পড়ো → আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন – উত্তর
একটি বাক্যে উত্তর দাও। (VSAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]
1। একটি সবৃন্তক ফুলের নাম লেখো।
উত্তর- একটি সবৃন্তক ফুলের নাম জবা।
2। সমাঙ্গ ফুল কাকে বলে?
উত্তর- যে ফুলের স্তবকের অংশগুলি সমান তাকে সমাঙ্গ ফুল বলে। যেমন- জবা, ধুতরা ইত্যাদি।
UPDATE:মাধ্যমিক পরীক্ষার ভীতি কাটাবার সেরা উপায়↓
3। ফুলের পুংজনন কোশ কোন্ অংশ থেকে উৎপন্ন হয়?
উত্তর- ফুলের পুংজনন কোশ পরাগধানীর মধ্যে পরাগরেণু থেকে উৎপন্ন হয়।
4। দুটি ভিন্নবাসী উদ্ভিদের উদাহরণ দাও।
উত্তর- দুটি ভিন্নবাসী উদ্ভিদের উদাহরণ হল তাল এবং পেঁপে।
5। পরাগযোগের দুটি জৈব বাহকের নাম লেখো।
উত্তর- পরাগযোগের দুটি জৈব বাহকের নাম হল- পাখি ও পতঙ্গ।
আরো পড়ো → বৃত্তস্থ চতুর্ভুজ সংক্রান্ত উপপাদ্য অধ্যায়ের গাণিতিক সমস্যার সমাধান
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 2/3]
1। কোন কোন বাহক নীচের উদ্ভিদগুলিকে পরাগযোগে সম্পন্ন করে তা সারণীতে তালিকা ভুক্ত করো —
(i) গম/ধান (ii) পাতাঝাঁঝি (iii) আম/জাম (iv) শিমূল
উত্তর- উপরোক্ত উদ্ভিদগুলির বাহকদের নামের তালিকা –
2। স্বপরাগযোগের একটি সুবিধা ও অসুবিধা লেখো।
উত্তর- স্বপরাগযোগের একটি সুবিধা – এই প্রকার পরাগযোগের ক্ষেত্রে কোনো বাহকের ওপর নির্ভর করতে হয় না। ফলে পরাগরেণুর অবাঞ্ছিতভাবে অপচয় হওয়ার কোনো ভয়ও থাকেনা।
স্বপরাগযোগের একটি অসুবিধা – এই প্রকার পরাগযোগের ফলে নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ সৃষ্টি হয় না।
3। পরাগযোগে বাহকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর- পরাগযোগের ক্ষেত্রে বিশেষত ইতর পরাগযোগের ক্ষেত্রে একই প্রজাতি ভুক্ত দুটি ভিন্ন গাছের ফুলের মধ্যে পরাগযোগ হয় এবং সেক্ষেত্রে পরাগরেণুকে অনেকটা পথ অতিক্রম করতে হয়। যেহেতু গাছ গমনে অক্ষম তাই বাহক একটি ফুল থেকে নির্গত পরাগরেণুকে অপর কোনো ফুলের গর্ভমুণ্ডে পৌঁছে পরাগযোগ সম্পন্ন করে। বাহকের অনুপস্থিতিতে এ কাজ সম্পর্ন হবে না তাই পরাগযোগের ক্ষেত্রে বাহকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
4। জবা ফুলে গর্ভকেশর চক্রের বিভিন্ন অংশগুলির ভূমিকা লেখ।
উত্তর- জবা ফুলে গর্ভকেশর চক্রের বিভিন্ন অংশের ভূমিকা –
গর্ভমুন্ড – এটি স্ত্রী স্তবকের সবচেয়ে ওপরের অংশ। পরাগধানী থেকে পরাগরেণুগুলি নির্গত হয়ে গর্ভপত্রের গর্ভমুন্ডেই সর্বপ্রথম স্থানান্তরিত হয় অর্থাৎ স্ত্রী স্তবকের এই অংশই সর্বপ্রথম পরাগরেণু ধারণ করে।
গর্ভদন্ড – গর্ভদন্ডের মধ্য দিয়েই পুং জননকোশসহ পরাগনালী, স্ত্রী স্তবকের সবচেয়ে ভিতরের অংশে অর্থাৎ গর্ভাশয়ে প্রবেশ করে।
গর্ভাশয় বা ডিম্বাশয় – এটি স্ত্রী স্তবকের সবচেয়ে ভিতরে থাকা স্ফীত একটি অংশ যা পুস্পাক্ষের সঙ্গে সংলগ্ন থাকে। এই অংশটি ডিম্বক বা অনিষিক্ত বীজ ধারণ করে। ডিম্বকের মধ্যে থাকে ডিম্বাণু, যা গর্ভদণ্ডের মধ্যে দিয়ে আসা পুং জননকোশ দ্বারা নিষিক্ত হয়ে পরিণত বীজ গঠন করে।
5। অসম্পূর্ণ ফুল কাকে বলে?
উত্তর- যেসব ফুলে চারটি প্রধান পুষ্পস্তবকের অর্থাৎ বৃতি, দলমন্ডল, পুং স্তবক ও স্ত্রী স্তবকের মধ্যে যেকোনো একটি বা একাধিক স্তবক অনুপস্থিত থাকে তবে সেই ফুলকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে। উদাহরণ- তাল, পেঁপে ইত্যাদি; এদের ফুলে হয় স্ত্রীস্তবক থাকে নয়ত পুংস্তবক থাকে।
6। শস্য নিউক্লিয়াস তৈরি হওয়ার পদ্ধতিটি লেখ।
উত্তর- শস্য নিউক্লিয়াস তৈরি হওয়ার পদ্ধতি –
ডিম্বকের ভ্রূণস্থলীর কেন্দ্রে থাকে দুটি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস, যারা পরস্পর মিলিত হয়ে ডিপ্লয়েড (2n) নির্ণীত নিউক্লিয়াস গঠন করে। পরাগনালীর মধ্য দিয়ে আগত দুটি পুং জনন নিউক্লিয়াসের একটি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার পর অবশিষ্ট যে পুং জনন নিউক্লিয়াসটি থাকে, তার দ্বারা ডিপ্লয়েড নির্ণীত নিউক্লিয়াসটি নিষিক্ত হওয়ার ফলে ট্রিপ্লয়েড (3n) শস্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয়।
আরো পড়ো → বিকল্প চিন্তা উদ্যোগ অধ্যায়ের প্রশ্ন ও উত্তর
দীর্ঘভিত্তিক প্রশ্নউত্তর (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
1। সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননে স্ত্রী গ্যামেট সৃষ্টি ও নিষেক, এই পদ্ধতি দুটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর- ডিম্বাণু বা স্ত্রী গ্যামেট সৃষ্টি (Formation of Egg):
ফুলের ডিম্বাশয়ের মধ্যে এক বা একাধিক ডিম্বক থাকে। ডিম্বকের ভ্রূণস্থলীর মধ্যে স্ত্রী গ্যামেট সৃষ্টি হয়। ভ্রূণস্থলীর মধ্যে সর্বপ্রথম একটি মাত্র হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস থাকে। পরবর্তীকালে এই হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াসটি মাইটোসিস কোশ বিভাজন সম্পন্ন করে ভ্রূণস্থলীর মধ্যে মোট 8 টি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস তৈরি করে। এই 8 টি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াসের মধ্যে 3 টি নিউক্লিয়াস, ডিম্বক মূলের দিকে অর্থাৎ ভ্রূণস্থলীর এক মেরুতে একসাথে অবস্থান করে। এদের প্রতিপাদ কোশ সমষ্টি (Antipodal cells) বলে।
অপরদিকে ডিম্বক রন্ধ্রের দিকে অর্থাৎ ডিম্বক মূলের বিপরীত দিকে তিনটে নিউক্লিয়াস অবস্থান করে। এই তিনটি নিউক্লিয়াসের মধ্যে দুটি নিউক্লিয়াস সহকারি কোশ (Synergids) গঠন করে এবং একটি নিউক্লিয়াস ডিম্বাণু বা স্ত্রী গ্যামেট (Egg) সৃষ্টি করে।
নিষেক (fertilization):
পরাগযোগের পর পরাগরেণু গর্ভমুন্ডের রস দ্বারা সিক্ত হওয়ার পরে অন্তঃস্তক বহিঃস্তকের ছিদ্র দিয়ে পরাগনালিকা হিসেবে বাইরে বেড়িয়ে আসে এবং গর্ভদন্ডের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। পরাগনালির মধ্যে একটি পুংজনন কোশ এবং নালিকা নিউক্লিয়াস থাকে। পরাগনালির দৈর্ঘ্য ক্রমশ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। পরাগনালি ভ্রূণস্থলীর কাছে আসার কিছুক্ষণ আগে পুংজনন কোশটি বিভাজিত হয়ে দুটি পুংজনন কোশ সৃষ্টি করীবং নালিকা নিউক্লিয়াসটি ভ্রূণস্থলীতে প্রবেশের আগে লুপ্ত হয়। এরপর পরাগনালিকার অগ্রভাগ ডিম্বক মূল বা ডিম্বকরন্ধ্র বা ডিম্বক-ত্বক ভেদ করে ডিম্বকের ভেতরে প্রবেশ করে।
ভ্রূণস্থলীতে প্রবেশের পর পরাগনালি অগ্রপ্রান্ত বিদীর্ণ হয়ে পুং গ্যামেট দুটি ভ্রূণস্থলীতে মুক্ত হয়। এরপর একটি পুং গ্যামেট ডিম্বাণু সঙ্গে মিলিত হয় অর্থাৎ নিষেক সম্পন্ন হয়। এর ফলে জাইগোট গঠিত হয় যা ডিপ্লয়েড (2n) প্রকৃতির। অপর পুংজনন নিউক্লিয়াসটি নির্ণীত নিউক্লিয়াসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শস্য নিউক্লিয়াস তৈরি করে, যার ক্রোমোজোম সংখ্যা ট্রিপ্লয়েড (3n) প্রকৃতির।
আরো পড়ুন → কোশবিভাজন ও কোশচক্র অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাওয়ার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।