শ্রেণি – দশম | বিভাগ – বাংলা | অধ্যায় – হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (Hariye Jaoa Kali Kolom)
দশম শ্রেণির বাংলা বিভাগ থেকে শ্রীপান্থ রচিত হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধ থেকে থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা।
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। শ্রীপান্থ ছদ্মনামে লিখেছিলেন (ক) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (খ) বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় (গ) সমরেশ বসু (ঘ) নিখিল সরকার (মাধ্যমিক ১৮)
উত্তর – শ্রীপান্থ ছদ্মনামে লিখেছিলেন (ঘ) নিখিল সরকার।
২। অনেক ধরে ধরে টাইপরাইটারে লিখে গেছেন মাত্র একজন। – তিনি হলেন- (ক) সত্যজিৎ রায় (খ) অন্নদাশঙ্কর রায় (গ) রাজশেখর বসু (ঘ) সুবোধ ঘোষ (পর্ষদ নমুনা)
উত্তর – (খ) অন্নদাশঙ্কর রায় অনেক ধরে ধরে টাইপরাইটারে লিখে গেছেন।
৩। নিজের হাতের কলমের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল যে লেখকের, তাঁর নাম- (ক) বনফুল (খ) পরশুরাম (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (ঘ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় (মাধ্যমিক’১৭)
উত্তর – নিজের হাতের কলমের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল যে লেখকের, তাঁর নাম (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়।
৪। সিজার যে কলমটি দিয়ে কাস্কাকে আঘাত করেছিলেন তাঁর পোশাকি নাম- (ক) রিজার্ভার (খ) স্টাইলাস (গ) পার্কার (ঘ) পাইলট (মাধ্যমিক’ ১৭)
উত্তর – সিজার যে কলমটি দিয়ে কাস্কাকে আঘাত করেছিলেন তাঁর পোশাকি নাম- (খ) স্টাইলাস।
৫। চারখন্ড রামায়ণ কপি করে একজন লেখক অষ্টাদশ শতকে কত টাকা পেয়েছিলেন- (ক) সাত টাকা (খ) আট টাকা (গ) ন- টাকা (ঘ) দশ টাকা (মাধ্যমিক’১৮)
উত্তর – চারখন্ড রামায়ণ কপি করে একজন লেখক অষ্টাদশ শতকে কত টাকা পেয়েছিলেন – (ক) সাত টাকা।
মাধ্যমিকে নম্বর বাড়াবার সেরা উপায় ↓
৬। চিনারা চিরকালই লেখার জন্য ব্যবহার করে আসছে- (ক) তুলি (খ) ব্রোঞ্জের শলাকা (গ) হাড় (ঘ) নলাখাগড়া (মাধ্যমিক’১৯)
উত্তর – চিনারা চিরকালই লেখার জন্য (ক) তুলি ব্যবহার করে আসছে।
৭। পালকের কলমের ইংরেজি নাম হল- (ক)স্টাইলাস (খ) ফাউন্টেন পেন (গ) কুইল (ঘ) রিজার্ভার পেন (মাধ্যমিক’ ২০)
উত্তর – পালকের কলমের ইংরেজি নাম হল – (গ) কুইল।
৮। কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন – (ক) প্রাবন্ধিক (খ) দার্শনিক (গ) গল্পকার (ঘ) নাট্যকার (মাধ্যমিক’২০)
উত্তর – কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন – (খ) দার্শনিক
৯।লেখকের দেখা দারোগাবাবুর কলম গোঁজা ছিল – (ক) মাথার টুপিতে (খ) প্যান্টের পকেটে (গ) জামার পকেটে (ঘ) পায়ের মোজায়
উত্তর- লেখকের দেখা দারোগাবাবুর কলম গোঁজা ছিল –(ঘ) পায়ের মোজায় ।
১০।কালির অক্ষর নাইকো পেটে, চন্ডী পড়েন- (ক) বেলুড় মঠ (খ) শ্মশানঘাটে (গ) মাঠেঘাটে (ঘ) কালীঘাটে
উত্তর- কালির অক্ষর নাইকো পেটে, চন্ডী পড়েন- (ঘ) কালীঘাটে।
আরো পড়ো → কোশ বিভাজন প্রশ্ন – উত্তর আলোচনা | আলো অধ্যায়ের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা | প্রাণী হরমোন প্রশ্ন উত্তর আলোচনা
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (VSAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু। – কোন আঘাতের পরিণতিতে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে? (পর্ষদ নমুনা)
উত্তর – স্বনামধন্য লেখক ত্রৈলক্যনাথ মুখোপাধ্যায় মারা গিয়েছিলেন হাতের কলম হঠাৎ অসাবধানবশত বুকে ফুটে গিয়ে, এই আঘাতের পরিণতিতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
২। হারিয়ে যাওয়া কালি কলম- এ বর্ণিত সবচেয়ে দামী কলমটির কত দাম? (মাধ্যমিক’১৭)
উত্তর – প্রবন্ধে বর্ণিত সবচেয়ে দামী কলমটির দাম আড়াই হাজার পাউন্ড।
৩। আমরা ফেরার পথে কোনও পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম- বক্তা কোনটা পুকুরে ফেলে দিতেন? (মাধ্যমিক’১৭)
উত্তর – লেখক ছোটবেলায় কলাপাতায় হোমটাস্ক করে তা শিক্ষককে জমা দিলে, তা তিনে দেখার পরে ছিঁড়ে পড়ুয়াদের ফেরতদিনে, ঐ ছেঁড়া পাতাগুলি লেখক কোনও পুকুরে ফেলে দিয়ে আসতেন।
৪। লেখক শ্রীপান্থ ছোটবেলায় কিসে হোম টাস্ক করতেন? (মাধ্যমিক’১৮)
উত্তর – লেখক ছোটবেলায় কলাপাতা কেটে কাগজের মতো সাইজ করে নিয়ে তাতে ‘হোম – টাস্ক’ করতেন।
৫। দুজন সাহিত্যিকের নাম করো যাদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা। (মাধ্যমিক ১৮)
উত্তর – বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দ এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করতেন।
আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন – উত্তর | আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি প্রশ্ন উত্তর | অসুখী একজন প্রশ্ন উত্তর
৬। সোনার দোয়াত কলম যে সত্যই হতো, – তা লেখক কীভাবে জেনেছিলেন? (মাধ্যমিক’ ১৯)
উত্তর – সুভো ঠাকুরের বিখ্যাত দোয়াত সংগ্রহ দেখতে গিয়ে সোনার দোয়াত কলম – এর কথা জেনেছিলেন।
৭। দোকানদার লেখককে কলম বিক্রি করার আগে কি জাদু দেখিয়েছিলেন? (মাধ্যমিক’ ১৯)
উত্তর – দোকানদার লেখককে জাপানি পাইলট কলম বিক্রি করার আগে ঐ কলমের নিব খুব শক্ত তা বোঝাবার জন্য সামনে দাড় কারনো একটি কাঠের বোর্ডের দিকে ছুঁড়ে মারেন এবং দেখা যায় এরপরেও ঐ কলমের নিব ঠিক আছে। এই ঘটনাকেই লেখক জাদু বলে উল্লেখ করেছিলেন।
৮। তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি। কী নিয়ে লেখকদের প্রথম লেখালেখি? (মাধ্যমিক’২০)
উত্তর – বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত, ঘরে তৈরি কালি এবং কলাপাতা, এই নিয়েই লেখকদের প্রথম লেখালিখি শুরু হয়।
৯। লাঠি তোমার দিন ফুরাইছে। – কথাটি কে বলেছেন? (মাধ্যমিক ২০)
উত্তর – এই উক্তিটির বক্তা বঙ্কিমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
১০।“বাবু কুইল ড্রাইভারস।” – এরকম নামকরণের কারণ কী?
উত্তর – পালকের কলমের ইংরেজি নাম ‘কুইল’; লর্ড কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের গরম গরম ইংরেজি দেখে তাঁদের বলতেন – ‘বাবু কুইল ড্রাইভারস’
১১।“কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য।” – কেন অস্পৃশ্য?
উত্তর – কলম আজ এত সস্তা হয়ে গেছে যে পকেটমারদের কাছে কলম আজ অস্পৃশ্য।
১২। ফিনিসীয়রা কী দিয়ে কলম বানাতেন?
উত্তর – ফিনিসীয়রা হাড় দিয়ে কলম বানাতেন।
১৩। “নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে।” – কোন্ নাম?
উত্তর – বাংলায় ফাউন্টেন পেনের পোশাকি নাম ছিল ঝরনা কলম, প্রাবন্ধিকের অনুমান এই নামটি হয়তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া।
১৪। আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম কী ছিল?
উত্তর – আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল ‘রিজার্ভার পেন’।
১৫।“তাঁরও ছিল ফাউন্টেন পেনের নেশা।” – কার?
উত্তর – এখানে ‘তাঁর’ বলতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলা হয়েছে।
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন – উত্তর আলোচনা দেখে নাও এই ভিডিও থেকে
রচনাধর্মী উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
১। কালি কলমের প্রতি ভালবাসা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে কীভাবে ফুটে উঠেছে, তা আলোচনা করো। (পর্ষদ)
উত্তর – ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটিতে লেখক শ্রীপান্থ কলমের বিবর্তনের একটি লেখচিত্র অঙ্কন করেছেন। শ্রীপান্থ একজন কলমপ্রিয় লেখক। তাঁর অফিস এবং সমসাময়িক সকল লেখকরা সাবেকি কাগজ কলম ছেড়ে কম্পিউটারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। কিন্তু লেখকের মন পড়ে থাকে ‘কালি খেকো কলমে’। লেখক তাঁর ছোটবেলায় লেখালিখি শুরু করেছিলেন বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত, ঘরে তৈরি কালি এবং কলাপাতা দিয়ে; সেই সময় লেখা – লিখি ছিল এক ছোটখাটো অনুষ্ঠান। বর্তমান সময়ে ডট পেনের সাথে লেখকের আত্মিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে নি, ‘লেখালিখি যেন এক দায়সারা কাজ’। লেখকের ভাষায় ডট পেন বা বল পেন হল ‘এক রোগা লিক লিকে রিফিলে কে কত দূর দৌড়াতে পারে তা নিয়ে তার গর্ব’’। লেখক এই প্রবন্ধে মানসচক্ষে ডুব দেন ইতিহাসের পাতায়, ফিরে দেখেন কলম এবং কলমকারের স্বর্ণযুগ, সেই প্রাচীন মিশরীয় যুগ থেকে বর্তমান সময়ের বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, কত অমর সৃষ্টি রেখে গেছেন বিভিন্ন ধরণের কলমে। তবে লেখক কিন্তু অবুঝ নন, এযুগে ডট পেনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি অবহিত, তাঁর কথায় ‘ফাউন্টেন পেন বা বল পেনের সাথে আমার কোনো বিবাদ নেই। কেননা, ইতিমধ্যেই বল-পেনের কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছি আমি’। এভাবেই হারিয়ে যাওয়া কলমের প্রতি লেখকের ভালোবাসা তাঁর প্রবন্ধের মাধ্যমে ফুঁটে উঠেছে।’
পড়া মনে রাখার সেরা উপায়! ↓
২। ফাউন্টেন পেন বাংলায় কি নামে পরিচিত? নামটি কার দেওয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে? ফাউন্টেন পেন এর জন্ম ইতিহাস লেখো। (মাধ্যমিক’১৭)
উত্তর – ফাউন্টেন পেন বাংলায় ঝরনা কলম নামে পরিচিত ছিল।
‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ঝরনা কলম নামটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া বলে উল্লেখ করেছেন।
ফাউন্টেন পেনের জনক হলেন লুইশ অ্যাডসন ওয়াটারম্যান। তিনি কর্মসুত্রে ছিলেন একজন ব্যবসায়ি, অন্যান্য ব্যবসায়ির মতো তিনিও ব্যবসার চুক্তির জন্য দোয়াত কলম ব্যবহার করতেন। কোনও একসময়ে চুক্তিপত্র সই করার সময়ে কালির দোয়াত পড়ে যায় এবং ওয়াটারম্যান সাহেবকে বাধ্য হয়ে নতুন কালির সন্ধানে যেতে হয়। কিন্তু তিনি আবার ফিরে এলে শোনেন যে ঐ চুক্তি অন্য কোনও ব্যবসায়ীর সাথে সম্পন্ন হয়েছে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেই জন্য তিনি একটি নতুন ধরণের কলম (যাতে কালি ভরে রাখা যায়) আবিষ্কার করেন। এইভাবে ফাউন্টেন পেন জন্ম নেয়।
৩। আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে। -কোন জিনিস আজ অবলুপ্তির পথে? এই অবলুপ্তির কারণ কি? এ বিষয়ে লেখকের মতামত কি? (মাধ্যমিক’ ১৮)
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ তার ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কালির কলম অবলুপ্তির কথা বলেছেন।
এই অবলুপ্তির কারণ হল কম্পিউটার; লেখকের কথায় ‘কম্পিউটার তাদের জাদুঘরে পাঠাবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছে’।
লেখক একজন কলমপ্রেমী মানুষ, লেখক কালির কলমে লিখতে ভালোবাসেন। কিন্তু সময়ের সাথে তাল মেলাতে কালির কলম অক্ষম। দীর্ঘ সময়ের বিবর্তনের পথ পেরিয়ে কলম আজ বল – পেনের রূপ নিয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে কলমের স্থান দখল করছে কম্পিউটার। লেখক এই ভেবে বিস্মিত হন যে ‘মানুষের হাত থেকে যদি কেড়ে নেওয়া হয় কলম, যদি হাতের লেখা মুছে যায় চিরকালের জন্য তবে আর কি রইল?’ কলমের দিন ফুরানোর ব্যাপারে লেখক সন্দিহান হলেও, লেখক মনে করেন ইতিহাসে কলমের ঠাই পাকা।
আরো পড়ো → প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ (দশম শ্রেণির ইতিহাস – 3rd Chapter) প্রশ্ন উত্তর
৪। আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই। কারা কালি তৈরি করতেন? তাঁরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ তাঁর প্রবন্ধে ছোটবেলায় লেখার কালি তৈরির কথা বর্ণনা করেছেন।
লেখক, কালি তৈরির একটি সহজ পদ্ধতির কথা বর্ণনা করেছেন। লেখকদের বাড়িতে রান্না হতো কাঠের উনুনে, তাতে কড়াইয়ের তলায় বেশ কালি জমত। লাউপাতা দিয়ে সেই কালি ঘষে তুলে তা একটি পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নেওয়া হত। লেখকদের মধ্যে যারা আরো ওস্তাদ তারা ঐ জলে হরিতকি ঘষে নিত বা আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে ঐ কালি গোলা জলে মিশিয়ে নিত। এরপর ঐ জলে একটি খুন্তির পেছনের অংশ ভালোভাবে গরমকরে তা ঐ জলে মিশিয়ে জল গরম করা হত। ঐ জল ফুটলে তা ঠাণ্ডা করে ন্যাকরায় ছেঁকে নিয়ে দোয়াতে কালি ভরা হত। এভাবেই ছোটবেলায় লেখকদের লেখার কালি প্রস্তুত হত।
৫। আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা। বক্তার আসল নাম কি? তাঁর ফাউন্টেন কেনার ঘটনাটি সংক্ষেপে বিবৃত করো। (মাধ্যমিক’ ২০)
উত্তর – উক্তিটির বক্তা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের লেখক শ্রী নিখিল সরকার ওরফে শ্রীপান্থ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে, লেখক কলকাতার একটি নামী কলমের দোকানে গিয়েছেন ফাউন্টেন পেন কেনার জন্য। দোকানি তাকে নানা রকম ফাউন্টেন পেনের যেমন – পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান, পাইলট ইত্যাদি কলমের কথা বলেন। কিন্তু লেখকের আর্থিক অবস্থা বিচার করে তিনি লেখককে একটি ‘সস্তার পাইলট’ কলমের কথা বলেন। দোকানী লেখককে জানান যে, কলমটি জাপানি এবং টেকসই। এই কথার প্রমাণ স্বরূপ দোকানি কলমটির খাপ সরিয়ে, সেটি সজোরে সামনে রাখা কাঠ বোর্ডের দিকে ছুঁড়ে মারেন এবং কলমটি বোর্ডের গায়ে গেঁথে যায়। এরপর তিনি বোর্ড থেকে নামিয়ে লেখককে দেখান যে ঐ কলমের নিব একদম ঠিক আছে। এই ঘটনা লেখকের মনে বিস্ময়ের সঞ্চার করে এবং লেখক ঐ দিন ‘জাদু – কলম’-টি কিনে বাড়ি নিয়ে আসেন।
৬। “মুঘল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির, কত না সম্মান!” – ‘তাঁদের’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাঁদের খাতির ও সম্মানের পরিচয় দাও।
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি প্রবন্ধকার শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে তাদের বলতে ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপি -কুশলী’ দের কথা বলা হয়েছে।
প্রবন্ধকারের ভাষায় ‘ওস্তাদ কলমবাজ’ অর্থাৎ লিপি – কুশলীদের খ্যাতি জগৎজোড়া। মুঘল দরবার থেকে শুরু করে বিশ্বের সব দরবারেই তারা খাতির ও সম্মননা পেতেন। এমনকি আমাদের বাংলা – মুলুকেও রাজা জমিদাররা লিপি-কুশলীদের গুনী বলে সম্মান করতেন, তাঁদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন। লিপি – কুশলীদের আনাগোনা যে কেবল রাজ দরবার বা মানী-গুনি মানুষজনের কাছেই সীমাবদ্ধ ছিল তা কিন্তু নয়, সেই সময়ে সাধারণ গৃহস্থও লিপিকরদের ডেকে পুথি নকল করাতেন। তাদের হাতের লেখা ছিল ‘মুক্তোর মত’, সব অক্ষর হত সমান, প্রতিটি ছত্র হত সুশৃঙ্খল এবং পরিচ্ছন্ন ,তাই সেই সময়ের পুথি দেখলে এখনও চোখ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু এত ভালো কাজ করেও তারা রোজগার করতেন সামান্যই। জানা যায়, অষ্টাদশ শতকে একজন লেখক চার-খণ্ড রামায়ণ কপি করে পেয়েছিলেন মাত্র নগদ সাত টাকা। এমনকি উনিশ শতেকও বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখাতে খরচ হতো মাত্র বারো আনা। তবুও আজকের দিনেও পুথির মাহাত্য অপরিসীম এবং তাকে ঘিরে লিপিকরের গর্বও চিরকালীন।
WBPorashona.com-এর পোস্ট আপডেট নিয়মিত পাবার জন্য –
- ফলো করো → WhatsApp চ্যানেল
- সাবস্ক্রাইব করো → YouTube চ্যানেল
- লাইক করো → Facebook পেইজ
- সাবস্ক্রাইব করো → টেলিগ্রাম চ্যানেল
আমাদের কাজ থেকে উপকৃত হলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।